ক্রীড়াঙ্গনে ফিরছেন লোকমান, ২ মামলা থেকে খালাস

`২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিপক্ষে মামলা করা হয়। আর দুই মামলা থেকেই আদালত তাকে খালাস দেয় ২৬ জানুয়ারি ২০২৫-এ।'

bfufe
ছবি : নয়া দিগন্ত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক। সাথে বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। তবে দুই মামলা এবং ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সব পদই হারিয়েছেন লোকমান হোসেন ভুঁইয়া। কারাবাসও করতে হয়েছে তাকে। তবে এখন দুই মামলা থেকেই খালাস। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ইসমাইল হোসেন এ বিষয়টি জানান। ফলে আবার ক্রীড়াঙ্গনে ফিরে আসতে কোনো বাধাই নেই অভিজ্ঞ এই ক্রীড়া সংগঠকের।

জানা গেছে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনের জন্য কাউন্সিলরশিপও জোগাড় করেছেন। সে সাথে মোহামেডান ক্লাবে ফেরার রাস্তাও তৈরি করে ফেলেছেন।

ব্যারিস্টার ইসমাইল জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিপক্ষে মামলা করা হয়। আর দুই মামলা থেকেই আদালত তাকে খালাস দেয় ২৬ জানুয়ারি ২০২৫-এ।

লোকমানের বিপক্ষে অভিযোগ তিনি মোহামেডান ক্লাবে ক্যাসিনো স্থাপন ও পরিচালনা করেছেন। এই ক্যাসিনো থেকে ভাড়া থেকে পাওয়া টাকা তিনি অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ ব্যাংকে পাচার করেছেন। এ অপরাধে তার বিপক্ষে মানি লন্ডারিংয়ে মামলা করেছিল সিইডি। এছাড়া লোকমান জ্ঞাত আয়বহির্ভূত পাঁচ কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছেন। এ জন্য তার বিপক্ষে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন।

তার আইনজীবীর বক্তব্য, বিচার চলাকালে সরকার পক্ষ ৩৯ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়েছে তৎকালীন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিশনার মমিনুল হক সাঈদ মোহামেডান ক্লাব থেকে একটি হল রুম ভাড়া নিয়েছিলেন প্রেস করার জন্য। কিন্তু পরে তিনি ক্ষমতার প্রভাবের জোরে সেখানে ক্যাসিনো স্থাপন করেছিল। ক্লাবের পক্ষে তখন বাধা দেয়া সম্ভব হয়নি। এই হল রুম ভাড়া বাবদ যে টাকা দেয়া হয়েছে তা ক্লাবের অ্যাকাউন্টে যথাযথভাবে জমা হয়েছে। এরপর চাটার্ড অ্যাকাউন্ট যে অডিট হয়েছে সে রিপোর্টও আমরা জমা দিয়েছি আদালতে। আমরা কোর্টে প্রমাণ করেছি ক্লাবে ক্যাসিনো স্থাপন ও পরিচালনার সাথে লোকমান হোসেন ভুঁইয়া কোনোভাবেই সম্পৃক্ত ছিলেন না। আর লোকমান হোসেনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় টাকা পাঠানোর যে অভিযোগ উঠেছিল সেটাও কিন্তু তদন্তে আসেনি। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে লোকমান হোসেন ভুঁইয়া এবং তার ছেলের নামে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য যে যৌথ অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা আছে সেটার পরিমাণ ৪৮৭ ডলার।

তাই মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ ও তদন্ত প্রতিবেদন দেখে বিজ্ঞ আদালত সন্তুষ্ট হয়েছেন। লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিপক্ষে সরকার পক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই টাকা পাচার মামলা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত মামলা থেকে লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন মহামান্য আদালত। এখন চাইলে তিনি ক্রীড়া সংগঠকের ভূমিকায় ফিরতে পারবেন। কোনো আইনি বাধা নেই।