চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি

চ্যাম্পিয়ন ভারত, স্বপ্নভঙ্গ নিউজিল্যান্ডের

‘২০০২ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির তৃতীয় আসরে শ্রীলঙ্কার সাথে শিরোপা ভাগাভাগির পর ভারত সর্বশেষ শিরোপা জিতে ২০১৩ সালে। ওয়ানডে ফরম্যাটে এরপর আর কোনো টুর্নামেন্ট জেতেনি ম্যান ইন ব্লুরা। এবার শেষ হলো সেই আক্ষেপ।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
Untitled-1
চ্যাম্পিয়ন ভারত, স্বপ্নভঙ্গ নিউজিল্যান্ডের | সংগৃহীত

নয়া দিগন্ত অনলাইন

অপেক্ষা শেষ হলো ভারতের, ফিরে পেল সিংহাসন। এক যুগ পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করল রোহিত শর্মার দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নতুন চ্যাম্পিয়ন তারা। সেই সাথে গড়লো ইতিহাস, সর্বোচ্চ তিনবার পেল চ্যাম্পিয়ন হবার স্বাদ।

অন্যদিকে আরো একবার স্বপ্নভঙ্গের দহনে নীল হলো নিউজিল্যান্ড। আরো একবার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকেও হোচট খেল তারা। দখলে নেয়া হলো না শিরোপা। দুবাইয়ে কিউইদের হার ৪ উইকেটে।

টসে জতে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৫১ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ভারত ভালো শুরু পেলেও একটা সময় চেপে ধরে কিউই বোলাররা। জমে উঠে লড়াই। তবে শেষ পর্যন্ত ১ ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় ভারতের।

ফাইনালে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য যে সংগ্রহ প্রয়োজন ছিল, ব্যাট হাতে সেটা পায়নি নিউজিল্যান্ড। আর বল হাতেও শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। সুবাদে উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের পথে এগিয়ে যায় ভারত।

পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর পর দেখেশুনে খেলতে থাকেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। দ্রুতই দলের রান পেরিয়ে যায় তিন অঙ্কের গণ্ডি। তবে গ্লেন ফিলিপসের অবিশ্বাস্য ক্যাচে ১৮.৪ ওভারে ভাঙে জুটি।

৫০ বলে ৩১ রান করে সান্টনারের শিকার হোন শুভমান গিল। তার বিদায়ের ২ বল পরেই বড় ধাক্কা খায় ভারত। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান বিরাট কোহলি। ২ বলে মাত্র ১ রানে ফেরেন তিনি।

সেই ধাক্কা সামলে উঠার আগে ফেরেন রোহিত শর্মাও। তবে ফেরার আগে আসল কাজটা করে দিয়ে যান ভারত অধিনায়ক। আসরে আগের ম্যাচগুলোতে তেমন একটা সুবিধা করতে না পারলেও ফাইনালে খেলেন ৮৩ বলে ৭৬ রানের ইনিংস।

১২২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর হাল ধরেন শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল। দু’জনে গড়েন ৬১ রানের জুটি। এই জুটিই মূলত লড়াইয়ে এগিয়ে দিয়েছে ভারতকে। ৬২ বলে ৪৮ রান করে ফেরেন আইয়ার।

তখনও অবশ্য জয় থেকে ৬৯ রান দূরে ভারত। এই সময় খানিকটা চাপ তৈরি করে নিউজিল্যান্ড। তবে তার আঁচ দলে পড়তে দেননি অক্ষর প্যাটেল ও লোকেশ রাহু। ৪০ বলে ২৯ রান করে অক্ষর প্যাটেল ফিরলেও জয় নিশ্চিত করেন রাহুল।

হার্দিক পাণ্ডিয়ার (১৮) সাথে ৩৮ ও জাদেযার সাথে অপরাজিত ১৩ রানের জুটি হয় তার। রাহুল অপরাজিত থাকেন ৩৩ বলে ৩৪ রানে। বল হাতে সান্টনার ও ব্রেসওয়েল নেন দুই উইকেট।

২০০২ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির তৃতীয় আসরে শ্রীলঙ্কার সাথে শিরোপা ভাগাভাগির পর ভারত সর্বশেষ শিরোপা জিতে ২০১৩ সালে। ওয়ানডে ফরম্যাটে এরপর আর কোনো টুর্নামেন্ট জেতেনি ম্যান ইন ব্লুরা। এবার ঘুচলো সেই আক্ষেপ।

এর আগে এইদিন টসে জিতে যেভাবে শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড, মনে হচ্ছিলো বড় পুঁজির দিকেই এগোচ্ছে তাদের ইনিংস। তবে আশায় গুঁড়োবালি ঢেলে দেন ভারতীয় স্পিনাররা।

চার স্পিনারের তোপে দ্রুতই খোলসবন্দী হয়ে পড়ে কিউই ব্যাটাররা। ডেরিয়েল মিচেলের লড়াকু ১০১ বলে ৬৩ ও মিচেল ব্রেসওয়েলের শেষ দিকের ৪০ বলে ৫৩* রানে আড়াই শ' পেরোয়া নিউজিল্যান্ড৷

৭.৫ ওভারে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। উইল ইয়ং ফেরেন চক্রবর্তীর শিকার হয়ে ১৫ রান করে। রাচিন রাবিন্দ্র আশা জাগালেও ইনিংস বড় করতে পারেনি, ২৯ বলে ৩৭ করে ধরা পড়েন কূলদীপের জালে। দ্রুত ফেরেন কেন উইলিয়ামসনও (১১)।

দলের নির্ভরযোগ্য দুই ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় কিউইরা। সেই ধাক্কা সামলে তুলতে গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি টম লাথামও, ৩০ বলে ১৪ রানে আউট হন তিনি। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

এরপর গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে ডেরিয়েল মিচেল হাল ধরার চেষ্টা করেন। তবে কমে রানের গতি। জুটিতে আসে ৮৭ বলে ৫৭ রান। ফিলিপস আউট হোন ৩৪ রানে। ব্রেসওয়েলকে নিয়ে আরো ৪৬ রান যোগ করেন মিচেল।

তবে তার বিদায়েই ভাঙে জুটি। শেষ দিকে আর কেউ সুবিধা করতে পারেনি। বরুণ ও কূলদীপ ২টি করে ও শামি ও রাবিন্দ্র জাদেযা নেন ১টি করে উইকেট।