রোববার ফাইনাল ম্যাচ হলে হারে ভারত!
সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল কি রোববার ‘সিনড্রোমে’ ভোগে? ঐতিহাসিকভাবে পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে অত্যন্ত তেমনটাই মনে হবে। কারণ ভারত যখনই আইসিসি আয়োজিত সীমিত ওভারের ক্রিকেটের কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে এবং সে ম্যাচটি রোববার হয়েছে, সেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই...

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল কি রোববার ‘সিনড্রোমে’ ভোগে? ঐতিহাসিকভাবে পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে অত্যন্ত তেমনটাই মনে হবে। কারণ ভারত যখনই আইসিসি আয়োজিত সীমিত ওভারের ক্রিকেটের কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে এবং সে ম্যাচটি রোববার হয়েছে, সেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হেরে গেছে টিম ইন্ডিয়া।
এ ‘ফাঁড়া’ কাটাতে পারেননি সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাও। শুধু মাহেন্দ্র সিং ধোনি একবার সেই ফাঁড়া কাটাতে পেরেছিলেন। তাছাড়া বাকিরা সেই রোববার ‘ফাঁড়ায়’ ভুগেছেন।
সবমিলিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে রোববার ছয়টি ফাইনাল (২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ধরা হয়নি) খেলেছে ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল। তার মধ্যে পাঁচটিতেই হেরে গেছে। আর এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালও পড়েছে রোববার। যা ভারতের ক্রিকেট ভক্তদের নিঃসন্দেহে ঘুম কেড়ে নেবে।
২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল
ভারতের এই ‘রোববার ফাঁড়া’ শুরু হয়েছিল ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল থেকে। ১৫ অক্টোবর (রোববার) ম্যাচ ছিল। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২৬৪ রান তুলেছিল সৌরভের নেতৃত্বাধীন ভারত। জবাবে ২ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে জিতে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। আর এবারো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ সেই কিউইরা।
২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল
শুরুটা আহামরি না হলেও পরে দুর্দান্ত খেলে বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল ভারতীয় দল। ফাইনাল হয়েছিল ২৩ মার্চ (রোববার)। প্রথমে ব্যাট করে ২ উইকেটে ৩৫৯ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২৩৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি ভারত। আরেকবার আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে হৃদয় ভেঙেছিল সৌরভের।
২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল
বাংলাদেশের মীরপুরে ফাইনাল হয়েছিল ৬ এপ্রিল। যথারীতি রোববার পড়েছিল। প্রথম ব্যাট করে ৪ উইকেটে মাত্র ১৩৪ রান তুলেছিল ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত। ১৩ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে জিতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ধোনির অধীন ভারত যে আইসিসি টুর্নামেন্টের চারটি ফাইনাল খেলেছিল ভারত, তার মধ্যে একমাত্র ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই রানার্স-আপ হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল
পুরো টুর্নামেন্টে ভালো খেলেও ফাইনালে দাঁড়াতেই পারেনি টিম ইন্ডিয়া। ফাইনাল হয়েছিল ১৮ জুন (রোববার)। প্রথমে ব্যাটিং করে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রান তুলেছিল পাকিস্তান। জবাবে মাত্র ১৫৮ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিল বিরাটের নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। হেরে গিয়েছিল ১৮০ রানে।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল
আর সেই ১৯ নভেম্বর, রোববার পড়েছিল সেই স্বপ্নভঙ্গের দিনটি। প্রথমে ব্যাটিং করে মাত্র ২৪০ রান করেছিল ভারত। ৪২টি বল বাকি থাকতে থাকতেই অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে ফাইনাল জিতেছিল। আর তারপর রোহিত, বিরাট, জসপ্রীত বুমরাহ, কে এল রাহুল, মুহাম্মদ সিরাজ, মুহাম্মদ শামিদের ভেঙে পড়ার ছবিগুলো এখনো ভুলতে পারেননি ভারতীয়রা।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতের আইসিসি ট্রফি জয়
১. ১৯৮৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল : ২৫ জুন (শনিবার) খেলা হয়েছিল।
২. ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল : ২৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) খেলা হয়েছিল।
৩. ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল : ২ এপ্রিল (শনিবার) খেলা হয়েছিল।
৪. ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল : ২৩ জুন (রোববার) খেলা হয়েছিল।
৫. ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল : ২৯ জুন (শনিবার) খেলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালও রোববার হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর (রোববার) ম্যাচটি হয়নি। পরদিন খেলা হয়েছিল। তবে সেদিনও বৃষ্টির জন্য খেলা পরিত্যক্ত হয়েছিল। যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। (যেহেতু ম্যাচের ফয়সালা হয়নি। তাই হিসেবের মধ্যে ধরা হয়নি।)
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস