রমজান

এ মাসে নজীজি দান-সদকা করতেন সবচেয়ে বেশি

একবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে মাঠভর্তি ছাগল দান করে দিলেন। এত বড় অনুদান পেয়ে লোকটি নিজ গোত্রের কাছে ফিরে বলেছিলেন, তোমরা মুহাম্মাদের দ্বীনের ওপর ঈমান আনো। তিনি এমনভাবে দান করেন, যেন দারিদ্র্যকে ভয় পান না।

দান
সংগৃহীত

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বারতা নিয়ে আমাদের মাঝে আগমন করেছে বরকতময় মাস রমজান। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য নেকি অর্জনের অফুরন্ত সুযোগ রেখেছেন, আমরা চাইলেই সেগুলো গ্রহণ করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে পারি।

রমজান শুধু ব্যক্তিগত আমলের মাস নয়, বরং সামাজিক বন্ধনের মাসও। খেয়াল করলে দেখবেন রমজানের প্রায় প্রতিটি আমলই আনুষ্ঠিকভাবে পালনীয়। সাহরি, ইফতার, তারাবি এ সবগুলোই কিন্তু আমরা সম্মিলিতভাবে পালন করি।

আমাদের সমাজে এমন কত মানুষ আছেন, যাদের ভাগ্যে সাহরি, ইফতারে আহার জোটে না। আমাদের আশপাশেই এমন মানুষ আছে। আছে অনেক বিপদগ্রস্ত মানুষও। যারা মধ্যবিত্ত হওয়ায় হঠাৎ তাদের ওপর আপতিত এই বিপেদের কথা হয়তো আপনার কাছে মুখ ফোটে বলবেন না। আপনার সামর্থ্য থাকলে এসব মানুষের পাশে দাঁড়ান, আল্লাহ খুশি হবেন।

রমজানে প্রত্যেক আমলের সওয়াব সত্তুর গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আমাদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই রমজানে অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি দান-সদকা করতেন। গরীব, দুঃখী, অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়াতেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজে দরিদ্র হয়ে যাওয়ার ভয় করতেন না।

একবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে মাঠভর্তি ছাগল দান করে দিলেন। এত বড় অনুদান পেয়ে লোকটি নিজ গোত্রের কাছে ফিরে বলেছিলেন, তোমরা মুহাম্মাদের দ্বীনের ওপর ঈমান আনো। তিনি এমনভাবে দান করেন, যেন দারিদ্র্যকে ভয় পান না।

রমজান মাসে নবীজির দানের কোনো সীমা-পরিসীমা থাকতো না। ইবনে আব্বাস রাজিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি দান করতেন যখন জিবরীল আ.-এর সাথে দেখা হতো। জিবরীল আ.-এর সাথে দেখা হলে তিনি হয়ে উঠতেন মুক্ত বাতাসের চেয়েও দানশীল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮০৩

এত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ রমজানে অনেক খেটে খাওয়া মানুষ রোজা রাখতে পারেন শুধু একারণে তিনি রোজা রাখলে রিকশা চালাতে পারবেন না, ভারী কোনো কাজ করতে পারবেন না। আর তিনি কাজ করতে না পারলে পরিবারের সদস্যদের খাবারের খরচ জোগাবে কে? এ চিন্তা করেই তিনি অনেকে রোজা রাখেন না। এসব আপনার আশপাশে থাকলে তাদের সহযোগিতা করুন। হয়তো আপনার সহযোগিতা পেয়ে তিনি রোজা রাখতে পারবেন। এভাবে তিনি যেমন রোজা রেখে রমজানের ফজিলত লাভ করবেন, ঠিক তেমনি আপনিও দানের অপুরন্ত সওয়াব পাবেন।

বিষয়সমূহ