রমজানের ফজিলত
যে মাস আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের
নয়া দিগন্ত অনলাইন
এ মোবারক মাসে দরবারে ইলাহি থেকে কোনো প্রার্থনাকারীকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। কোনো সাহায্যপ্রার্থীকে নিরাশ করা হয় না। বরং প্রত্যেক ব্যক্তির দুআ ও প্রার্থনা কবুল করা হয়।

অসংখ্য রহমত ও বরকতে নিজেকে সিক্ত করার মাস হলো রমজান। এ মাস ঈমান ও তাকওয়ার আয়নার মতো। যাতে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় বান্দার ওপরে বিশেষ রহমত ও ক্ষমা নাজিল করেন। হাদিসে এসেছে রমজানের প্রথম দশক রহমত, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত ও তৃতীয় দশক জাহান্নাম থেকে নাজাতের। এ মাসে নূর বৃদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতায় উন্নতি লাভ করা যায়। এমনকি প্রতিদান ও সওয়াবও অনেক বেশি লাভ করা যায়। এ মাসে দুআ কবুল করা হয়।
রমজানকে আল্লাহ নিজের মাস বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কেমন যেন এ মাসে আল্লাহ মানুষকে নিজের খাস বান্দা বানাতে চান। মানুষকে অনুপ্রাণিত করা হয় তারা যেন নিজের খালিক ও মালিকের সাথে ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক জোড়া লাগিয়ে নেয়।
এ মোবারক মাসে দরবারে ইলাহি থেকে কোনো প্রার্থনাকারীকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। কোনো সাহায্যপ্রার্থীকে নিরাশ করা হয় না। বরং প্রত্যেক ব্যক্তির দুআ ও প্রার্থনা কবুল করা হয়।
এ মাসের একেক মুহূর্ত হাজার বছরের ইবাদতের চেয়ে মূল্যবান। প্রত্যেক আমলের সওয়াব এ মাসে সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয়। এতে কল্যাণকামীদের নির্ভরতা বৃদ্ধি করা হয়। আর যারা মন্দ কাজ করতে চায় তাদের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে এক আহ্বানকারী আহ্বান করেন, ‘হে কল্যাণপ্রত্যাশীরা এগিয়ে যাও, আর হে মন্দপ্রত্যাশীরা ফিরে এসো।’
হজরত আবু হুরায়রা রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন রমজান আসে তখন আসমানের দরজা খুলে যায়। আরেক বর্ণনায় আছে জান্নাতের দরজা খুলে যায় এবং জাহান্নামের দরজাকে বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শেকলবন্দী করে দেয়া হয়।’
আরেক হাদিসে এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাস এসেছে, আল্লাহ তায়ালা এমাসের রোজাকে তোমাদের ওপরে ফরজ (আবশ্যক) করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর বিতাড়ীত শয়তানকে শেকলবন্দী করা হয়।
এ মাসে আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন একটি রাত রাখা হয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, যে ব্যক্তি ওই রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রইলো সে বঞ্চিতই রইলো।’
হজরত আনাস রাজিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘রমজানে জান্নাতের দরজা খুলে যায়। জাহান্নামের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আর শয়তানকে শেকল পরানো হয়। ধ্বংস ওই ব্যক্তির জন্য যে রমজান পেলো কিন্ত ক্ষমা অর্জন করতে পারলো না।’
রমজান বিষয়ে রাসূলের হাদিসগুলো দেখলে এ মাসের শ্রেষ্ঠত্ব ও পবিত্রতা বোঝা যায়। সুতারাং এত ফজিলতপূর্ণ এ মাসের মূল্যায়ন করার উচিত। সমস্ত ব্যস্ততা কমিয়ে এ মাসে আল্লাহর নৈকট্য, রহমত ও মাগফিরাত অর্জনে সচেষ্ট হওয়া উচিত। এক বর্ণনায় এসেছে, রমজান হলো পুরো বছরের অন্তরের মতো, যদি এটি সঠিকভাবে কাটে তাহলে পুরো বছরই ভালো কাটে।