জুমার দিন
যে আমলে এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব

প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সপ্তাহে একটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর তা হলো জুমার দিন। এদিনকে সাইয়েদুল আইয়াম বা সব দিনের সরদার বলা হয়। জুমার দিনকে মুসলমানদের ঈদের দিনও বলা হয়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ দিনের অনেক তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা, জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝো। এরপর নামাজ শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, (৬২), আয়াত, ৯-১০)
জুমার দিন কতটা গুরুত্বপূর্ণ হলে পবিত্র কোরআনে এদিনের আমলের বিষয়ে আলাদা তাগিদ ও দিকনির্দেশনা দিলেন। হাদিসেও জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে অনেক বর্ণনা এসেছে।
যে আমলে এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব
হজরত আউস ইবনে আউস রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও এক বছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস,৩৪৫) হাদিসে বর্ণিত ছয়টি কাজ আমরা কিন্তু চাইলেই খুব সহজে করতে পারি।
সুরা কাহাফ তিলাওয়াত
জুমার দিনে সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করতে পারি। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে তার নুর এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে (মিশকাত ২১৭৫)।
আসরের পরে দুরুদ শরীফের আমল
হজরত আবু হুরায়রা রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থানে বসে ৮০ বার নিচের দুরূদ শরিফটি পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের ( ছগিরা) গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে এবং ৮০ বছরের ইবাদাত-বন্দেগির সওয়াব লিখে দেয়া হবে।
দরূদ শরিফটি হচ্ছে
أَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدِ نِ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَ عَلٰی آلِهِ وَ سَلِّمْ تَسْلِیْماً
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়ালা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা ।
অর্থ : হে আল্লাহ, দুরুদ ও শান্তি বর্ষণ করুন উম্মি নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লঅহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের ওপর।
আসরের নামাজ শেষে নামাজের জায়গায় বসে কারো সাথে কথার পূর্বে ৮০ বার নির্ধারিত দুরুদ শরীফ পড়তে পারি। জুমার দিন মাগরিবের আগমুহূর্তে দুআ কবুল করা হয়। ওই সময় আমরা মনখুলে আল্লাহর কাছে দুআ করতে পারি।
যে সময় দুআ কবুল হয়
জুমার দিন মাগরিবের আগ মুহূর্তে দুআ কুবল হয়। এ সময় আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে মনখুলে দুআ করতে পারি।
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাশ করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯)