রমজানে ঢাবি ক্যাম্পাসে মুক্ত পরিবেশ ও আলোকসজ্জায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মসজিদে ইফতার মাহফিল ও তারাবির নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পথচারীদের ইফতারি, সেহরি করানো হচ্ছে। যেটা বিগত সময়ে দেখা যায়নি বললেই চলে। যা এক দিকে ধর্মীয় সমৃদ্ধি এবং অন্য দিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও ভালোবাসা বাড়াতে সহায়ক।
Printed Edition

হারুন ইসলাম
এ বছর মুক্ত পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে পবিত্র রমজান মাস পালন করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে লাগানো হয়েছে ঝলমলে আলোক বাতি, রঙিন স্টিকার।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মসজিদে ইফতার মাহফিল ও তারাবির নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পথচারীদের ইফতারি, সেহরি করানো হচ্ছে। যেটা বিগত সময়ে দেখা যায়নি বললেই চলে। যা এক দিকে ধর্মীয় সমৃদ্ধি এবং অন্য দিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও ভালোবাসা বাড়াতে সহায়ক। এ ধরনের উদ্যোগকে সবাই সাধুবাদ জানাচ্ছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রাত নামলেই ঝাড়বাতিতে জ্বলমলে হয়ে ওঠে সব হলের প্রতিটি প্রবেশদ্বার। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার পাশে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে আলোর ঝলকানি। এসব আলোকসজ্জা শুধু দৃষ্টিনন্দন নয় বরং মুসলমানদের ধর্মীয় আবেগ ও রমজান মাসের মর্যাদাকেও তুলে ধরছে।
যা দেখে শিক্ষার্থীরা আনন্দিত, প্রশংসা করছে ক্যাম্পাসের নতুন সাজসজ্জা নিয়ে। তারা বলছেন, এমনভাবে ক্যাম্পাস সাজানো আমাদের কাছে খুবই মধুর এক অনুভূতি। বিশেষ করে রমজান মাসে এ রকম পরিবেশে ইবাদত করতে ভালো লাগে। এখন যেভাবে রমজান পালন করতে পারছি ফ্যাসিবাদের জমানায় সেটা সম্ভব হয়নি। রমজানে কোনো ইসলামী কর্মসূচি দেখলেই তারা শিবিরের কর্মসূচি বলে চিহ্নিত করত।
এ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলপাড়ায় প্রতিদিন ইফতার বাজার বসছে। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল, মুজিব হলের প্রবেশদ্বার, ও জসিমউদ্দীন হল মাঠে বসেছে ইফতার বাজার। হাকিম চত্বর, গ্রন্থাগার সংলগ্ন দোকান, টিএসসিসহ একাধিক এলাকায়ও বিক্রি হয় ইফতার সামগ্রী।
বিকেল ৫টার পরে লোকসমাগম দেখলে মনে হয় মিনি চকবাজার। ফর্দ অনুযায়ী বন্ধুরা মিলে ইফতারি কিনছেন।
ঢাবি মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন, মহিমান্বিত রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রমজান পালন এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পবিত্র এই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলকে যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। হলগুলোতে মনোমুগ্ধকর আলোকসজ্জা করা হয়েছে। রাতে এক অন্যরকম আবহ সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রতিটি হলেই ইফতারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একসাথে বসে ইফতার করছেন। এই রমজান সজ্জা শুধু সৌন্দর্যই বাড়য়নি, সেই সাথে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতি বাড়াতেও সাহায্য করেছে। রমজান মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজ খান বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে হলগুলোতে আলোকসজ্জা সাধারণত ঈদ এবং রমজানের আনন্দ ও সৌন্দর্য প্রকাশ করে। এটি একটি উজ্জ্বল ও উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে। শিক্ষার্থীদের মনে খুশি ও শান্তি বয়ে আনে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে এবার ক্যাম্পাসের হলগুলোতে মাহে রমজান মাসের আমেজ ও খুশি বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কুরআন তেলাওয়াত ও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ইফতার কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে।