করতোয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব
Printed Edition

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার করতোয়া নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতেকরে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। নদীর তীরবর্তী এলাকা ধসে পড়া, কৃষিজমি ভেঙে নদীতে পড়া এবং রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাওয়াসহ এই বালু উত্তোলনের বিরুপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের ওপর।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়নের শালিকাদহ, কুলানন্দপুর ও কৃষ্ণরামপুর গ্রামসহ নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আইনের তোয়াক্কা না করেই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। অপর দিকে, ঘোড়াঘাট পৌরসভার চাম্পাতলী ও ঘাটপাড়া এলাকায় বালুর চর কেটে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী, নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেয়া আবশ্যক। কিন্তু এসব নিয়মকে অগ্রাহ্য করে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ভর্তি করে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, নদীর পাড় ভাঙছে, বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্রের ওপর।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন করলে বর্ষাকালে এই গ্রামগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনের তৎপরতা প্রয়োজন। যদিও মাঝে মাঝে অনেকটা লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে প্রশাসন, এতো বালু উত্তোলন থেমে থাকে না। প্রভাবশালী মহল প্রশাসনকে হাত করেই তাদের বালু উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, সারাদিন বেপরোয়া গতিতে বালুভার্তি ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলতে থাকে গ্রামীণ সড়ক পথে। এতে করে রাস্তা ধুলাবালুতে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। কোটি টাকার সড়কগুলো ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ছে। সেই সাথে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম জানান, বালু উত্তোলনের বিষয়টি সত্য এবং আমরা প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করছি। কিন্তু সমস্যা হলো আমরা বালু পয়েন্টে পৌঁছার আগেই তাদের কাছে খবর চলে যায় এবং তারা পালিয়ে যায়। তবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।