বরগুনায় উন্নয়ন প্রকল্পে নয়ছয়

দুর্নীতি দূর করতে হবে

Printed Edition

একটি সহযোগী দৈনিকের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনার বেতাগী পৌরসভার প্রায় ১৮ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে। সাবেক পৌরমেয়র ও বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির, ঠিকাদার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান খান ও বেতাগী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিনের যোগসাজশে এ অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়া অন্যরা পলাতক রয়েছেন।

জানা গেছে, সিটিসিআরআইপি প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনার বেতাগী পৌরসভা। দরপত্র অনুযায়ী, ১০টি আরসিসি সড়ক, একটি ইউনিব্লক সড়ক ও কালভার্টের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজেডটিএল অ্যান্ড এমকেই (জেবি) সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পায়। পরবর্তী সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজেডটিএল অ্যান্ড এমকেই (জেবি) নির্ধারিত পার্টনার ইনচার্জ খলিলুর রহমানের অনুকূলে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল কার্যাদেশ প্রদান করে বেতাগী পৌরসভা। এখনো কাজ চলমান রয়েছে।

অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য সরেজমিন স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দরপত্রের প্রাক্কলন অনুযায়ী কোনো কাজই করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার দু’পাশের ইটের গাঁথুনির নিচে তিন ইঞ্চি সিটি ঢালাইয়ের কথা উল্লেখ থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো রকম সাদা বালু দিয়ে এক থেকে দেড় ইঞ্চি ঢালাই করেছে।

বেতাগী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রাক্কলনে পুরাতন রাস্তা ঠিক রেখে ৩ ইঞ্চি ঢালাই করার কথা রয়েছে। তাই করা হচ্ছে। সাবেক পৌরমেয়র ও ঠিকাদারের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে শুধু এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অভিযোগের পরেও দুবার করে প্রকল্প পরিচালক মোখলেছুর রহমান ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে তারা অভিযোগের কোনো ধরনের সত্যতা পাননি।

কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমান খান বলেন, হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এসব করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদৌ সত্য নয়।

বেতাগী পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির গাজী বলেন, ‘প্রাক্কলনের বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। সঠিক ও সুন্দরভাবে কাজটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমি সরেজমিন কাজ পরিদর্শন করেছি, কিন্তু কোনো অনিয়ম পাইনি।’

সাধারণত ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি হয়। বিগত আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে। এ থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। ছোট ছোট অনিয়ম ও দুর্নীতি বড় অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণ। কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতিকে ছাড় দেয়া যাবে না। সব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শুধু বরগুনা নয়, সারা দেশে একই মনোভাব পোষণ করতে হবে।