জরিপ শেষ, ফারাক্কা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ বৈঠক আজ

‘আমরা কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং গঙ্গার পানির প্রবাহ নিয়ে কিছু তথ্য ভাগাভাগি করেছি’

নয়া দিগন্ত ডেস্ক
Printed Edition

গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির ৩০ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর। চুক্তিটি পুনঃনবায়ন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে বসছেন আজ বৃহস্পতিবার। ফারাক্কায় গঙ্গার পানিপ্রবাহের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে গত দুই দিন ধরে সরেজমিন জরিপ চালিয়েছেন দুই দেশের কারিগরি বিশেষজ্ঞ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

যৌথ নদী কমিশনের অধীনে আজ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমিটির ৮৬তম এ বৈঠকে উভয়পক্ষ ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পরিচালিত জরিপের তথ্য সমন্বয় করবে। ফারাক্কা ব্যারাজ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপান্ডে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং গঙ্গার পানির প্রবাহ নিয়ে কিছু তথ্য ভাগাভাগি করেছি।’

ফারাক্কা বাঁধের অবস্থান বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৮ কিলোমিটার উজানে পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলায়।

সোমবার ও মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল বাঁধের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। গঙ্গার ভাটিতে বাংলাদেশ অংশে পানির স্তর ও ফিডার খালগুলো পর্যবেক্ষণ করেন তারা।

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী মো: আবুল হোসেন বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে প্রাকৃতিক কারণে প্রতি দশ দিনে গঙ্গার পানির স্তর হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা হবে।’

ফারাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর কে দেশপাণ্ডে শুষ্ক মৌসুমে ব্যারাজে ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় ভারতের গঙ্গা ও বাংলাদেশের পদ্মা নদীর পানিপ্রবাহ দেখতে দুই দেশের যৌথ পরিদর্শনকে বার্ষিক সাধারণ চর্চা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ফারাক্কায় গঙ্গায় পানির প্রবাহ ছিল ৬৮ হাজার কিউসেক।’ ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি সই হয়।

ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি পানি থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক, অবশিষ্ট পানি পাবে বাংলাদেশ। নদীতে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ পাবে ৪০ হাজার কিউসেক, অবশিষ্ট পানি পাবে ভারত। আবার ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানি থাকলে তা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যেই সমান ভাগে ভাগ হবে।

আজকের বৈঠকের পর দুই দেশের প্রতিনিধিদল নিজ নিজ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। পরে এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যৌথ নদী কমিশনের বাংলাদেশের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি গত সোমবার কলকাতায় পৌঁছান। আগামী ৮ মার্চ তারা ঢাকায় ফিরে আসবেন বলে জানা গেছে।