সংযোগ সড়ক না হওয়ায় কাজে আসছে না কোটি টাকার সেতু

Printed Edition
bangla-3
সেতু নির্মাণের ৫ বছরেও সংযোগ সড়ক হয়নি : নয়া দিগন্ত

দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা

পটুয়াখালীর দশমিনা-বাউফল উপজেলার মধ্যবর্তী বাঁশবাড়িয়া ও বগী বাজার খালের ওপর সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো সেখানে নির্মিত হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে কোটি টাকার সেতু নির্মাণ করেও এর কোনো উপকার ভোগ করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। উল্টো আরো ভোগান্তিতে পড়েছেন খালের দুই পাড়ের লোকজন। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলা জটিলতার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না বলে অনেকে বলছেন। তবে উপজেলার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানান, আগামী জুনের মধ্যে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হবে।

দশমিনা এলজিইডি সূত্র আরো জানায়, দুই উপজেলার (দশমিনা ও বাউফল) মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বগী বাজার খালের ওপর ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সেতুটির কার্যাদেশ দেয়া হয়। দরপত্র অনুযায়ী ২০২১ সালে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কেটি ৮২ লাখ ১০ হাজার ৫০৬ টাকা। বগী বাজার খালের দুই পাড়ে রয়েছে অন্তত ১১টি গ্রাম।

গত মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, দশমিনা-বাউফল সীমানাবর্তী বগী বাজার খালের ওপর সেতু নির্মাণের কাজ শেষ। এখন বাকি আছে সংযোগ সড়কের কাজ। আগের রাস্তা থেকে নির্মাণাধীন সেতুটির উচ্চতা অনেক। সেখান থেকে রাস্তার সংযোগ স্থাপনের জন্য কিছু স্ল্যাব বসিয়ে পারাপার হচ্ছে দুই পাড়ের মানুষ।

কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অন্তর চন্দ্র সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা কত যে কষ্টে আছি, হ্যাতো নিজের চোখেই দেখলেন। ব্রিজ করে হালাইয়া রাখছে। কিন্তু দুই পাশে সংযোগ সড়কটা করছে না। এইয়া লইয়া কইতে কইতে আমরা ক্লান্ত হইয়া গেছি।’

বাউফল উপজেলার সাবেক কালাইয়া ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল জানান, প্রায় সময়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। আমারা স্বপ্রোণদিত হয়ে বয়স্ক রোগী ও ছোট শিক্ষার্থীদের হাত ধরে পার করে দিই।

কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, ব্রিজে সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের শিশু শিক্ষার্থীরা বড় কষ্ট করে এপার ওপার হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হচ্ছে। ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে এলজিইডি’র পটুয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানান, ভূমি অধিগ্রহণ মামলা চলমান থাকায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। তবে আগামী জুনের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা হবে।