ইউক্রেনে মার্কিন সহযোগিতা ফের চালু হতে পারে : রুবিও

বিবিসি
Printed Edition
inter-3
ইউক্রেনে মার্কিন সহযোগিতা ফের চালু হতে পারে : রুবিও

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ইউক্রেনে সাময়িক বন্ধ থাকা মার্কিন সহযোগিতা ‘ফের চালু হতে পারে’, তবে তা নির্ভর করছে সৌদি আরবে হতে যাওয়া কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের আলোচনার ওপর। মঙ্গলবারের এ বৈঠকের আগে মার্কিন এ শীর্ষ কূটনীতিক রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের দেয়া আংশিক যুদ্ধবিরতির ‘সম্ভাবনা’ দেখার কথাও জানিয়েছেন। সোমবার রুবিও বলেছেন, আমি বলছি না যে এটাই যথেষ্ট কিন্তু সঙ্ঘাত বন্ধে এই ধরনের ছাড় আপনি দেখতেই চাইবেন।

জেদ্দার আলোচনায় কিয়েভ রাশিয়ার সাথে আকাশ ও নৌপথে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিতে পারে বলে প্যারিস ভিত্তিক এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা। রাশিয়া এর আগে এ ধরনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির ধারণা উড়িয়ে দিয়েছিল। বলেছিল, এটা কিয়েভকে শক্তিশালী করতে সময় দেয়া এবং ইউক্রেনের সামরিক পতন রোধ করার চেষ্টা মাত্র।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে বৈঠক করতে সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সৌদি আরব গেছেন। তবে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে দেখা যাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এদিন এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের এ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইউক্রেনের অবস্থান ‘পুরোপুরি গঠনমূলক’ এবং আলোচনায় ‘বাস্তবসম্মত ফল’ আসবে বলে তিনি আশাবাদী।

মঙ্গলবারের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকার কথা জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাকের। তার সাথে থাকবেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের দলে রুবিওর পাশাপাশি থাকবেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।

সোমবার জেদ্দায় নামার আগে রুবিও বলেছেন, শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের আকাক্সক্ষা কী, তা নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘কঠিন কিছু করার জন্য দেশটিকে প্রস্তুত থাকতে হবে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য যেমনটি রাশিয়াকেও করতে হবে,’ বলেছেন তিনি।

‘তাদের কী করতে হবে, বা কী করা প্রয়োজন এ ধরনের কোনো শর্ত ঠিক করে দিতে যাচ্ছি না আমি। আমরা কেবল শুনতে চাই, রাশিয়া যা চায় তার বিপরীতে তারা কতদূর ছাড় দিতে চায়। তারপর আমরা দেখব আমাদের মধ্যে সত্যিকারের পার্থক্য কতটুকু আছে,’ বলেছেন রুবিও। মার্কিন এ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, উভয় পক্ষকেই এটা অনুধাবন করতে হবে যে সঙ্ঘাতের কোনো ‘সামরিক সমাধান নেই’ এবং এটার সমাধান হতে পারে কেবলমাত্র ‘কূটনীতিক উপায়েই’।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মার্কিন দূত উইটকফ আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে মস্কোতে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে। এই বৈঠকের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ক্রেমলিনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জেদ্দায় এমন এক সময়ে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে যখন ট্রাম্প রাশিয়ার সাথে একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে জেলেনস্কিকে তুমুল চাপে রেখেছেন। তবে কোনো যুদ্ধবিরতি হলেও তাতে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে কিনা, তার ঠিক নেই। গত মাসে হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বাকবিতণ্ডার পর এটাই কিইভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে যাচ্ছে। হোয়াইট হাউজের ওই বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সামরিক সহযোগিতা স্থগিত ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিলে জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হন বলে মনে হচ্ছে।

‘যুদ্ধ বন্ধে উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে প্রেসিডেন্ট তার হাতে যা আছে তার সবকিছু ব্যবহারের চেষ্টা করছেন,’ বলেছেন রুবিও। উইটকফ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সৌদি আরবে বৈঠকের পর খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে জেলেনস্কি ফের হোয়াইট হাউজে যাবেন বলে তিনি আশাবাদী। ‘আমি সত্যিই আশাবাদী, সব সঙ্কেতই ইতিবাচক,’ বলেছেন তিনি।