অন্য দৃষ্টি
ফ্যাসিবাদ কি মবে ভর করল
কার্যত আওয়ামী লীগ ক্ষমতার উত্তাপে সারা দেশে মানুষের ওপর চরম নির্যাতন নিষ্পেষণ চালিয়েছিল। গুম-খুনের এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কায়েম করেছিল। মানুষের সম্পদ কেড়ে নেয়া, নারী ধর্ষণ করা, গণহারে অপমান লাঞ্ছনার কারণে এ আশঙ্কা তারা করত যে, ক্ষমতা হারালে জনতা তাদের ওপর এর প্রতিশোধ নেবে। এত বড় দাগে প্রতিশোধ গ্রহণ করা না হলেও প্রতিদিন গড়ে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ওপর শত শত আক্রমণ এবং ডজন ডজন নেতাকর্মীর প্রাণ হরণ এবং বিপুল সম্পদ ক্ষতি হওয়া ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো ও বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সহনশীলতার নীতি গ্রহণের ফলে তা হয়নি। আওয়ামী লীগের নৃশংসতার সমপরিমাণ পাশবিকতা দিয়ে প্রতিশোধ নেয়া হয়নি। বর্তমানে চলা গড়ে সতের বা আঠারোটি মবকে এর সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। তবে তুলনামূলক মৃদু মবও কোনোভাবে আশকারা দেয়ার কিছু নেই

৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর থেকে দেশে যেন দাবি-দাওয়ার তুফান বইছে। বিভিন্ন পক্ষ রাজপথে একসাথে নেমে আসায় চারদিকের পরিস্থিতি টালমাটাল। এ সুযোগে একটা শ্রেণী মব সৃষ্টি করছে। পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদীদের জন্য এটা যেন মহাসুযোগ। তারা ব্যাপক উৎসাহে এতে অংশ নিচ্ছে, পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। গত সপ্তাহে পত্রিকাগুলো প্রতিদিন এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে, উপর্যুপরি প্রধান শিরোনামও করেছে। এ বিশৃঙ্খলার কারণ সামনে না এনে বরং তা আড়াল করে মবকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে পরিবেশন করছে।
মবতন্ত্র এ দেশে নতুন নয়; এর একটি সংস্কৃতি আগে থেকেই আছে। গত ১০ বছরে ১০০৯টি গণপিটুনির রেকর্ড রয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন ৭৯২ জন। আহত হয়েছেন ৭৬৫ জন। প্রতি মাসে ৮৩টি গণপিটুনির ঘটনায় গড়ে ৭ জনের প্রাণ গেছে। আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিক সময়ে দেশে এমন মব হয়েছে। দেশ এখন একটি অস্বাভাবিক সময় পার করছে। এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আইনশৃঙ্খলা কাঠামোর ধসে যাওয়া এ অস্বাভাবিকতার মূল কারণ। ৫ আগস্ট দেশের পুলিশ বাহিনী পালিয়ে গিয়েছিল। এই বাহিনীর সদর দফতরেও পুলিশের একজন সদস্যকেও নিজেদের পোশাকে সে দিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। নাগরিকরা সে দিন রাজধানীর রাজারবাগের পুলিশ সদর দফতর পাহারা দিয়েছে। ট্রাফিকের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশও হাওয়া হয়ে যায়। ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করতে হয় ছাত্র-জনতাকে। দুই লাখ সদস্যের বিশাল বাহিনী দৃশ্যপট থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার নজির পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রায় এক সপ্তাহে দেশে পুলিশের অস্তিত্ব ছিল না। এখনো পুলিশের কমান্ড স্ট্রাকচার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। পুলিশ এখনো নড়বড়ে অবস্থায়, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী চক্র ও তার দোসররা অক্ষত আছে। তাদের আছে অঢেল অর্থ ও জনবল। যা দিয়ে যেকোনো ধরনের অঘটন ঘটানো সম্ভব। এর ভূরি ভূরি প্রমাণ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে তারা রেখেছে।
দশ বছরের সাথে বিগত সাত মাসে মবের চিত্রটি তুলনা না করে বাড়াবাড়ি রকমের প্রচারণা কোনোভাবে সমীচীন হতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারের এ সময়ে ১১৪টি মবের ঘটনায় ১১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গড়ে মাসে ১৭ করে প্রাণ হারিয়েছেন। এ মবতন্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাজুক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে হবে। এর সাথে আওয়ামী লীগের হুমকির বিষয়টিও মিলিয়ে দেখা দরকার। দলটির দ্বিতীয় প্রধান ওবায়দুল কাদেরসহ শীর্ষ নেতারা প্রায় বলতেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাবে। দোর্দণ্ড প্রতাপে ক্ষমতায় থেকে এমন কথা বলার মনোস্তত্ত্ব কী? এ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা হয়নি। আইনশৃঙ্খলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ওই সময়ের আশঙ্কার বিষয়ে যত্নসহ খতিয়ে দেখা দরকার। কার্যত আওয়ামী লীগ ক্ষমতার উত্তাপে সারা দেশে মানুষের ওপর চরম নির্যাতন নিষ্পেষণ চালিয়েছিল। গুম খুনের এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কায়েম করেছিল। মানুষের সম্পদ কেড়ে নেয়া, নারী ধর্ষণ করা, গণহারে অপমান লাঞ্ছনার কারণে এ আশঙ্কা তারা করত যে, ক্ষমতা হারালে জনতা তাদের ওপর এর প্রতিশোধ নেবে। এত বড় দাগে প্রতিশোধ গ্রহণ করা না হলেও প্রতিদিন গড়ে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ওপর শত শত আক্রমণ এবং ডজন ডজন নেতাকর্মীর প্রাণ হরণ এবং বিপুল সম্পদ ক্ষতি হওয়া ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো ও বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সহনশীলতার নীতি গ্রহণের ফলে তা হয়নি। আওয়ামী লীগের নৃশংসতার সমপরিমাণ পাশবিকতা দিয়ে প্রতিশোধ নেয়া হয়নি। বর্তমানে চলা গড়ে সতের বা আঠারোটি মবকে এর সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। তবে তুলনামূলক মৃদু মবও কোনোভাবে আশকারা দেয়ার কিছু নেই।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে গত সপ্তাহে জনতা একটি বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সংবাদপত্রের বর্ণনামতে, প্রচারণা চালানো হয়েছিল ওই বাড়িতে আওয়ামী দোষররা লুকিয়ে আছে। অবৈধ অস্ত্রপাতি ও বিপুল অর্থ রয়েছে। তল্লাশির নামে ২০-২৫ জনের এক গ্রুপ বাসায় লুটপাট চালায়। এ সময় পুরো বাসাটি ভাঙচুর করে তছনছ করে দেয়া হয়। মবের এ বিবরণ বিপুল উৎসাহে চারদিকে প্রচার করা হয়। প্রচারকারীদের যুক্তি হচ্ছে রাজধানীর কেন্দ্রে সরকারের নাকের ডগায় মব হচ্ছে। সুতরাং সারা দেশে শত শত ঘটনা ঘটছে, এ কথা উল্লেখের প্রয়োজন নেই। গুলশানের ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে এ সময়ে চলা মবের চরিত্র আমরা ধরতে পারব।
বাসাটি হাসিনা সরকারের উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের ছেলে সাবেক এমপি তানভীর ইমামের সাবেক শ্বশুরের। এ মবের পেছনে রয়েছে বাসার পুরনো কেয়ার টেকারের উসকানি। তিনি এ প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বাসাটিতে আওয়ামী দোসর এবং অবৈধ অস্ত্র ও অর্থ রয়েছে। মূলত বাসার মালিকের সাথে তার মনোমালিন্য ছিল। এ নাজুক পরিস্থিতি ব্যবহার করে তিনি প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন। এখানে পক্ষগুলো আওয়ামী লীগ ও তার সুবিধাভোগীরা। উসকানিতে পড়ে যারা তল্লাশি চালিয়েছেন তারা নিজেরাও অওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী পীড়নের শিকার। তবে ঘটনা ঘটার অল্প সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গুলশানে অভিজাত এলাকায় মব হয়েছে এটা প্রচারণা চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হয়েছে, এটি দেখাতে আমাদের মিডিয়া যত তৎপর এর পেছনে আরো কিছু ফ্যাক্ট যে রয়েছে তা জানাতে একেবারে অনুৎসাহী। সরকারেরর প্রাণকেন্দ্রে মব এমন খবর বড় কাভারেজ দিয়ে প্রথম সুযোগে প্রচার করে দেয়া হয়েছে। বাড়ির মালিকের সাথে সাবেক কেয়ারটেকারের বিরোধের কথা প্রচারে কেউ আর উৎসাহ পায়নি।
পয়লা মার্চ রজধানীর লালমাটিয়ায় দুই তরুণী গণপিটুনির শিকার হন। তারা একটি চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন। এই মব পর্যবেক্ষণ করলে ‘তৌহিদী জনতার’ নামে অতি উৎসাহীদের আমরা বুঝতে পারব। ওই সময় দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক বয়স্ক লোক। তিনি ধূমপানরত মেয়েদের দেখে কটূকথা বলে সেখান থেকে তাদের চলে যেতে বলেন। দোকানিকেও দোকান বন্ধ করতে বলেন। মেয়ে দুটো এসবের তোয়াক্কা না করায় বয়স্ক ব্যক্তি তাদের অশ্লীল গালিগালাজ করেন। উত্তেজনার একপর্যায়ে একটি মেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে চা ছুড়ে মারেন। এ অবস্থায় বয়স্ক ব্যক্তি শোরগোল করলে মানুষ জড়ো হয়। মেয়ে দুটো মারধরের শিকার হন। তাদের চুলের মুঠো ধরে দফায় দফায় পিটানো হয়। পরে তাদের অভিভাবকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশ মেয়ে দুটোকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে মিটমাট হয়।
নারীদের প্রকাশ্যে ধূমপান আমাদের সমাজে ভালো চোখে দেখা হয় না। কিন্তু এ বয়স্ক ব্যক্তি যেভাবে দুই তরুণীকে শায়েস্তা করেছেন; কোনোভাবে তা সমর্থনযোগ্য নয়। তাদের তিনি শোভনভাবে জনপরিসরে ধূমপান না করার কথা জানাতে পারতেন। ওই কথা না শুনলেও তাদের গালমন্ধ করার অধিকার তিনি রাখেন না। কথা না শোনায় কোনোভাবে তিনি মেয়েদের বিরুদ্ধে মব তৈরি করতে পরেন না। তাদের পিটুনির বিষয়টি সম্পূর্ণ বেআইনি হয়েছে। এ কাজের জন্য তার শাস্তি হওয়া দরকার ছিল। তা না হয়ে উপস্থিত মবের চাপে ঘটনার মিটমাট করা হয়। কিন্তু মেয়ে দুটো অপমান ও মারধরের শিকার হলেও তার প্রতিকার পাননি।
গণমাধ্যমের খবর, ওই বয়স্ক ব্যক্তিটির নাম রিংকু। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অনুসারী। ক্ষমতার পালাবদলের পর তিনি শক্তিশালী একটি দলে ভিড়ে গেছেন। এ ব্যক্তি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে ধূমপায়ী হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এমনকি তার মাদকাসক্ত হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ ধরনের ব্যক্তির সমাজে নীতি শিক্ষা দিতে চাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা একেকজন ধর্মের পক্ষে লাঠিয়াল হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের লোকজন ফ্যাসিবাদী জমানায় মসজিদে ঢুকে নির্মমভাবে মুসল্লিদের পিটিয়েছেন। দাড়ি টেনে জামাকাপড় ছিঁড়ে চরম অপমান করেছেন। এমন ঘটনা একটি দুটি নয় শত শত। বায়তুল মোকাররমসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মসজিদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় প্রকাশ্যে গুলি করে মুসল্লিদের হত্যা করেছে। এ দলের লোকেরা এখন তৌহিদী জনতা সেজে নারীদের পিটিয়ে লাঞ্ছিত করে বাহবা নিচ্ছেন। দোষ ঘাড়ে গিয়ে পড়ছে দীর্ঘদিন পীড়নের শিকার ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোর ওপর। এগুলো দেখানো হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হিসেবে। ফলে সরকার মছিবতে পড়ছে।
বাংলাদেশের সমাজে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, নারীনিগ্রহ, গণপিটুনিসহ অপরাধের একটি সাধারণ প্রবণতা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এ সময়ে ওই একই অপরাধ হচ্ছে। পার্থক্য হচ্ছে এসব অপরাধী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নড়বড়ে ও দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে। এ কারণে প্রত্যেকটি অপরাধের মাত্রা বর্ধিত আকারে দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা না করে একে বাড়িয়ে দেখানোর প্রবণতা আত্মঘাতী।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে। গত ছয় মাসে পুলিশের ওপর ২২৫টি হামলা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রেও প্রচারণার একই মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে। খবর প্রকাশ ও আলোচনার ধরনে পেছনের কারণটি উধাও। সোজাসাপটা অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি। এ সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে ফ্যাসিবাদী সরকার পুলিশকে সাধারণ মানুষের শত্রু বানিয়েছিল। তখন পুলিশের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করার সুযোগ ছিল না। বিনা বিচারে হত্যা, নির্যাতন, অপমান করা, মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়ার অবাধ লাইসেন্স পেয়েছিল পুলিশ। বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মী চরম নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। তাদের ও তাদের পরিবারের ওপর মামলাবাণিজ্যসহ শত উপায়ে নির্মমতা চালানো হয়। হত্যা গুম নির্যাতন নিষ্পেষণের বাইরেও পুলিশি বাণিজ্যে বিরোধী দলের হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এর সাথে অগণিত সাধারণ মানুষ এই পুলিশি ব্যবস্থার করুণ শিকার। সেই প্রবল প্রতাপশালী পুলিশ এখন দুর্বল নড়বড়ে অবস্থায়। পুলিশের ওপর হামলা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না; কিন্তু এর পেছনের দিকটা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।
হাইপ তোলার নিন্দনীয় অপচেষ্টা
মাগুরায় আট বছরের শিশুকে পাষণ্ড আত্মীয় ধর্ষণ করেছে। বুকে প্রচণ্ড চাপ পাওয়া শিশুটির ফুসফুসের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে গেছে। অস্ত্রোপচার করে অতিরিক্ত বাতাস বের করা হয়েছে। সিএমএইচের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে সে চিকিৎসাধীন। চারদিনেও শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এর মধ্যে আরো কয়েক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এমনকি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় মানুষের বিক্ষুব্ধ হওয়া স্বাভাবিক। তবে একে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে হাইপ উঠানো অন্যায়। এ নিয়ে পত্রিকায় এক্টিভিজম চোখে পড়ছে। সোমবারে পত্রিকাগুলো এসব খবর নিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ। ভারত বিজয়ী হয়েছে এর বাইরে পত্রিকার প্রথম পাতায় ধর্ষণ ছাড়া অন্য কোনো খবর নেই। এ সুযোগে এতদিন চুপ থাকা নারী মানবাধিকার নেত্রীরা হাজির হয়েছেন। প্রথম পাতায় তারা মন্তব্য লিখছেন। এরা ধর্ষণের বিচার চান, যখন অর্ন্তবর্তী সরকার ইতোমধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই মানবাধিকার কর্মীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পৈশাচিক নারী অধিকার লঙ্ঘন কখনো চোখে দেখেননি। গুম-খুন তাদের কাছে মানবাধিকার লঙ্ঘন মনে হয়নি। আয়নাঘর গুপ্ত কারাগার প্রতিষ্ঠা তাদের কাছে দোষের কিছু মনে হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকে পাষণ্ড আলেপদের কখনো নারী অধিকার লঙ্ঘনকারী মনে হয়নি। র্যাবের আলেপ এক ব্যক্তিকে গুম করার পর অসহায় করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে। রোজা ভেঙে তাকে ধর্ষণ করা হয়।