আজাদ কাশ্মির দখল নিয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল পাকিস্তান

চ্যাথাম হাউজে এক অনুষ্ঠানে ভারতশাসিত কাশ্মিরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার থেকে শুরু করে ‘কাশ্মির ইস্যু’র সমাধান নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানেই জয়শঙ্কর পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা আজাদ কাশ্মির দখলে এনে কাশ্মির ইস্যু ‘শেষ করা’র কথা বলেন।

India-Pakistan
কাশ্মির নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান | সংগৃহীত

সম্প্রতি ব্রিটেনে বসে কাশ্মির ইস্যুতে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। চ্যাথাম হাউজে এক অনুষ্ঠানে ভারতশাসিত কাশ্মিরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার থেকে শুরু করে ‘কাশ্মির ইস্যু’র সমাধান নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানেই জয়শঙ্কর পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা আজাদ কাশ্মির দখলে এনে কাশ্মির ইস্যু ‘শেষ করা’র কথা বলেন।

এর পাল্টা হিসেবে এবার মুখ খুলল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকত আলি খান তার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে জয়শঙ্করের মন্তব্যকে নাকচ করে দিয়ে ভারতকে কাশ্মিরের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে চ্যাথাম হাউজের অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, “কাশ্মিরে আমরা খুব ভালো কাজ করেছি। অধিকাংশ ইস্যুরই সমাধান হয়ে গেছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার একটা ধাপ ছিল। এরপরে কাশ্মিরে অর্থনৈতিক গতিবিধি, সামাজিক ন্যায়বিচার দ্বিতীয় ধাপ ছিল। নির্বাচনের আয়োজন, তৃতীয় ধাপ ছিল। আমার মনে হয় এখন আমরা অপেক্ষা করছি কাশ্মিরের ‘চুরি করে নেয়া’ অংশ ফেরানোর, যা পাকিস্তানিরা বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে। এই কাজ হয়ে গেলে, আমি আশ্বাস দিচ্ছি কাশ্মির ইস্যুর সমাধান হয়ে যাবে।”

এর জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘৫ মার্চ লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে আজাদ কাশ্মির নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর করা মন্তব্য আমরা নাকচ করছি। আজাদ কাশ্মির সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবি করার পরিবর্তে ভারতকে গত ৭৭ বছর ধরে নিজেদের দখলে রাখা জম্মু ও কাশ্মিরের অঞ্চলটি ছেড়ে দেয়া উচিত। জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবগুলোতে এই বিধান রয়েছে যে জম্মু ও কাশ্মিরের চূড়ান্ত অবস্থা জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ জনমত গ্রহণের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। ভারতের পক্ষপাত এই বাস্তবতা পরিবর্তন করতে পারে না।’

এদিকে চ্যাথাম হাউজের যে অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর কাশ্মির নিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন, সে অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথেই খলিস্তানিদের হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন জয়শঙ্কর। এ নিয়ে মুখ খুলেছে ব্রিটিশ সরকার। ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) একজন মুখপাত্র এ নিয়ে বলেছেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিটেন সফরের সময় চ্যাথাম হাউসের বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ব্রিটেন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করে। তবে ভয় দেখানো, হুমকি দেয়া বা পাবলিক ইভেন্টগুলোকে ব্যাহত করার যেকোনো প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি আমরা। মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করব। সমস্ত কূটনৈতিক অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস