লেবাননের স্বাস্থ্যখাতে ইসরাইলের হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত : অ্যামনেস্টি
নয়া দিগন্ত অনলাইন
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তারা গত বছরের ৩ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বৈরুত ও দক্ষিণ লেবাননের স্বাস্থ্যসেবা ও যানবাহনের ওপর চারটি ইসরাইলি হামলার তদন্ত করেছে। সে সময় হামলায় ১৯ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিহত, ১১ জন আহত হন। হামলায় একাধিক অ্যাম্বুলেন্সসহ দুটি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে সাম্প্রতিক যুদ্ধে লেবাননের অ্যাম্বুলেন্স, প্যারামেডিক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর ইসরাইলের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত বলে বুধবার জানিয়েছে মানবাধিকার-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গত ২৭ নভেম্বর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির ফলে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে দুই মাসের সর্বাত্মক যুদ্ধসহ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটে। সর্বাত্মক যুদ্ধের সময় ইসরাইল স্থল সেনা পাঠিয়েছিল।
এ সময় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যোদ্ধা ও অস্ত্র পরিবহনের জন্য হিজবুল্লাহ-অনুমোদিত ইসলামিক স্বাস্থ্য কমিটির অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করার অভিযোগ করে। তবে হিজবুল্লাহ এ অভিযোগ অস্বীকার করে।
অ্যামনেস্টির মতে, ‘লেবাননে যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বারবার বেআইনি হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত।’
লেবাননের সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রোম সংবিধির অধীনে লেবাননের ভূখণ্ডে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত ও বিচারের এখতিয়ার দিতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিকারের অধিকার নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
লেবাননের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ গত ডিসেম্বরে বলেন, ‘যুদ্ধের সময় হাসপাতালগুলোতে ৬৭টি হামলা করা হয়। এর মধ্যে ৪০টি হাসপাতাল সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। হামলার ফলে ১৬ জন নিহত হয়।’
তিনি জানান, জরুরি সাড়াদান সংস্থাগুলোর ওপর ২৩৮টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে এবং ২০৬ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও হামলায় অগ্নিনির্বাপক ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ২৫৬টি জরুরি যানবাহনকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তারা গত বছরের ৩ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বৈরুত ও দক্ষিণ লেবাননের স্বাস্থ্যসেবা ও যানবাহনের ওপর চারটি ইসরাইলি হামলার তদন্ত করেছে। সে সময় হামলায় ১৯ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিহত, ১১ জন আহত হন। হামলায় একাধিক অ্যাম্বুলেন্সসহ দুটি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এমন কোনো প্রমাণ পায়নি যে হামলার সময় স্থাপনা বা যানবাহন সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছিল।’
সূত্র : বাসস