ট্রাম্পের পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান খামেনির
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বলেছেন, ‘কিছু উৎপীড়ক সরকার আলোচনার ওপর জোর দেয়। কিন্তু তাদের আলোচনার লক্ষ্য সমস্যা সমাধান নয়, বরং তাদের নিজস্ব প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দেয়া ও তা চাপিয়ে দেয়া।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করতে চাইছে না বরং তাদের ওপর দাবি চাপিয়ে দিচ্ছে।
এর আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতৃত্বের কাছে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
ফক্স বিজনেসের সাথে ট্রাম্পের সাক্ষাৎকারের পর খামেনি এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র থেকে বিরত রাখার জন্য ইরানকে দুটি উপায়ে মোকাবেলা করা যেতে পারে- সামরিকভাবে অথবা একটি চুক্তির মাধ্যমে।’
এদিকে তেহরানের কর্মকর্তারা শনিবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে তারা এখনো ট্রাম্পের কাছ থেকে কোনো চিঠি পাননি।
ইরানের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে খামেনি ট্রাম্পের আহ্বানকে নাকচ করে দিয়ে জানান, ওয়াশিংটন আগের আলোচনার চেয়েও বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাইছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, খামেনি বলেছেন, ‘কিছু উৎপীড়ক সরকার আলোচনার ওপর জোর দেয়। কিন্তু তাদের আলোচনার লক্ষ্য সমস্যা সমাধান নয়, বরং তাদের নিজস্ব প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দেয়া ও তা চাপিয়ে দেয়া।’
তিনি আরো বলেন, ‘তাদের জন্য আলোচনা হলো নতুন দাবি উপস্থাপনের একটি উপায়। বিষয়টি কেবল পারমাণবিক বিষয় নিয়ে নয়, তারা নতুন কোনো দাবি উত্থাপন করবে। ইরান অবশ্যই তা মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘তারা দেশের প্রতিরক্ষামূলক ক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক প্রভাবের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের দাবি করে বলে- এটা করো না, তার সাথে দেখা করো না, এই জিনিস তৈরি করো না অথবা তোমার ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়।’
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প তেহরানের সাথে একটি নতুন চুক্তির আহ্বান করেন। কিন্তু তিনি আক্রমণাত্মক নিষেধাজ্ঞার প্রচারণা পুনরায় শুরু করেন এবং তেহরানের তেল রফতানি শূন্যে নামিয়ে আনার হুমকি দেন।
ইরান ও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা শক্তির মধ্যে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রথম তেহরানের বিরুদ্ধে তথাকথিত ’সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি প্রয়োগ করেন। ২০১৫ সালের ওই চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের ওপর কঠোর সীমা আরোপ করা হয়েছিল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার ইরানের তেল শিল্পকে লক্ষ্য করে নতুন দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের আয়ের প্রধান উৎস তেল শিল্প। এই পদক্ষেপগুলো ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলির সাথে যুক্ত সংস্থা, জাহাজ ও ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে। বাইডেনের অধীনে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিতভাবে এই ধরনের শাস্তি জারি করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা