গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনায় ইসরাইলের সম্মতি

ইসরাইল রোববার জানিয়েছে, হামাসের সাথে তাদের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর একটি সেতুবন্ধন ব্যবস্থা হিসেবে গাজায় সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাবে তারা সমর্থন জানিয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনায় ইসরাইলের সম্মতি
গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনায় ইসরাইলের সম্মতি | ছবি : বাসস

ইসরাইল রোববার জানিয়েছে, হামাসের সাথে তাদের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর একটি সেতুবন্ধন ব্যবস্থা হিসেবে গাজায় সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাবে তারা সমর্থন জানিয়েছে। জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

মধ্যরাতের ঠিক পরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফের উত্থাপিত এই প্রস্তাবে মার্চের শেষের দিকে রমজান মাসের সমাপ্তি এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি ইহুদিদের তীর্থ যাত্রা অনুষ্ঠান পাসওভার পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ ছিল এই সপ্তাহের শেষে পর্যন্ত। তবে গাজা যুদ্ধের আরো স্থায়ী অবসান ঘটানোর প্রত্যাশিত দ্বিতীয় ধাপের এখনো কোনো নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না। এখনো পর্যন্ত এ সংক্রান্ত আলোচনা অমীমাংসিত থাকায় গাজায় বন্দী জিম্মির ভাগ্য ও ২০ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনির জীবন অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

ইসরাইলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তি কার্যকর হওয়ার দিন গাজায় থাকা জিম্মিদের অর্ধেক মুক্তি পাবে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছালে বাকিদের মুক্তি দেয়া হবে।

হামাসের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এর আগে হামাস যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর ধারণা প্রত্যাখ্যান করে।

মার্কিন পরিকল্পনা হিসেবে বর্ণনা করা যুদ্ধবিরতি বর্ধিত করার এই পরিকল্পনায় ইসরাইলের সমর্থন এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুদ্ধ পুনরায় শুরু না করার জন্য সতর্কবার্তার ঝড় উঠছে। যুদ্ধটি ১৫ মাস ধরে গাজাকে ধ্বংস করে দেয়, উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় পুরো জনসংখ্যাকে বাস্তুচ্যুত করে এবং ক্ষুধা সংকটের জন্ম দেয়।

জাতিসঙ্ঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস যুদ্ধে ‘বিপর্যয়কর’ প্রত্যাবর্তনের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি রোধ করতে এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য আরো ভয়াবহ পরিণতি এড়াতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সকল বন্দীর মুক্তি অপরিহার্য।’

গত সপ্তাহে কায়রোতে মিসরীয়, কাতারি ও আমেরিকান মধ্যস্থতাকারীদের সাথে ইসরাইলি কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেন। তবে শনিবার ভোরে কোনো ঐকমত্যের লক্ষণ দেখা যায়নি। গাজার মুসলমানরা রমজানের প্রথম দিনটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকাগুলো রঙিন আলো জ্বালিয়ে উদযাপন করে।

হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী দ্বিতীয় পর্যায়ে অবশিষ্ট সকল বন্দীকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক ম্যাক্স রোডেনবেক বলেন, ‘হামাস প্রথম পর্যায় বর্ধিত করার আগ্রহ দেখাবে না। তবে ইসরাইলকে দ্বিতীয় পর্যায়ে যেতে বাধ্য করার ক্ষমতাও তাদের নেই।’

সূত্র : এএফপি/বাসস