এবার আলোচনায় চীনের তৈরি এআই এজেন্ট ‘ম্যানাস’

চলতি বছরের শুরুতে উন্মুক্ত হওয়া চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) অত্যাধুনিক চ্যাটবট ‘ডিপসিক’ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি শিল্পকে ব্যাপক আলোড়িত করেছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

চলতি বছরের শুরুতে উন্মুক্ত হওয়া চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) অত্যাধুনিক চ্যাটবট ‘ডিপসিক’ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি শিল্পকে ব্যাপক আলোড়িত করেছে। সম্প্রতি ‘ম্যানাস’ নামে আরো একটি উন্নত এআই এজেন্ট উন্মুক্ত করেছে চীনের স্টার্টআপ কোম্পানি বাটারফ্লাই ইফেক্ট। ইতোমধ্যে এটি দেশটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করছে এবং ডিপসিকের মতোই সাফল্যের আশা জাগাচ্ছে।

বেইজিং থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ম্যানাস সাধারণ চ্যাটবটের চেয়েও উন্নত সংস্করণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের সহজ নির্দেশনায় এটি শেয়ার বাজার বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ভ্রমণ হ্যান্ডবুক তৈরিসহ সবকিছু করতে পারে।

চীনের স্টার্টআপ কোম্পানি বাটারফ্লাই ইফেক্ট গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যানাস উন্মুক্ত করেছে। অনলাইনে পোস্টকৃত এক ভিডিওতে ম্যানাস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইচাও জি বলেছেন, এটি মানব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যন্ত্রের সহযোগিতার পরবর্তী দৃষ্টান্ত এবং সম্ভাব্য এজিআই এর আভাস, যার (এজিআই) লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মানুষের মতো চিন্তা করা।

ম্যানাস সবাইকে উন্মুক্তভাবে ব্যবহারের সুযোগ দেয়নি। এতে শুধু ইনভাইটেশন কোডের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার পাওয়া যায়। তবুও এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। ইতোমধ্যে এর অফিসিয়াল রেকর্ড সার্ভারে এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি সদস্য যুক্ত হয়েছে।

ম্যানাস নামটি এসেছে ল্যাটিন নীতিবাক্য ‘মেনস এট ম্যানাস’ থেকে। যার অর্থ ‘মন ও হাত’। এটি জ্ঞান ও ব্যবহারিক প্রয়োগকে একীভূতকরণের ইঙ্গিত দেয়।

বিশেষ প্রবেশাধিকার

সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এর একজন রিসার্চ ফেলো মনোজ হারজানি বলেছেন, ম্যানাস হলো এমন একটি পদ্ধতি, যা ব্যবহারকারীদের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ স্বচালিত (অটোনোমাস) হয়ে কাজ সম্পাদন করতে পারে।

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ডিপসিক ও চ্যাটজিপিটি থেকে ম্যানাস এ কারণে ব্যতিক্রম যে এটি একটি চ্যাট-স্টাইল ইন্টারফেসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাড়া দিতে পারে। এটি টিকিট বুকিং থেকে শুরু করে জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী সহজেই প্রার্থী বাছাইয়ের মতো কাজগুলো সম্পাদন করতে সক্ষম।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেরিনা ঝাং বলেছেন, ডিপসিক জনসম্মুখে আসার আগে সম্পূর্ণ পর্দার আড়ালে এটির উন্নয়ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ম্যানাস ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে। ইনভাইটেশন কোডের মধ্যে প্রবেশাধিকার সীমিত রাখছে এবং বড় বাজেটের কোম্পানির গ্রাহকদের টার্গেট করছে।

তিনি বলেন, এই স্বাতন্ত্রতা যদিও আলোচনার জন্ম দিতে পারে, তবুও এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ডিপসিক ওপেন সোর্স হিসেবে একটি বৃহৎ সম্প্রদায় তৈরি করেছে। যদি ম্যানাসের প্রবেশাধিকার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া না হয়, তাহলে ডিপসিকের মতো আলোড়ন গড়ে তুলতে পারবে না।

এএফপি কোম্পানির দেয়া একটি ইনভাইটেশন কোড দিয়ে ম্যানাস পরীক্ষা করে দেখেছে। এটি ডিপসিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় নিয়ে সাড়া দিয়েছে। তবে এটি তার চীনা প্রতিদ্বন্দ্বী ডিপসিক অথবা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি চ্যাটজিপিটির তুলনায় কঠিন কাজ করতে পারে। যেমন- এটি কাস্টম ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে।

সূত্র : এএফপি/বাসস