যুক্তরাষ্ট্রে আটক
বাংলাদেশিসহ ১০ অবৈধ অভিবাসীকে পাঠানো হতে পারে গুয়ানতানামো কারাগারে
মামলায় বলা হয়েছে, রক্ষীরা বন্দীদের মৌখিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। এর মধ্যে রয়েছে বন্দীদের চেয়ারে বেঁধে রাখা, পানি না খেতে দেয়া, বন্দীদের গুলি করার হুমকি দেয়া এবং একজনের হাত ভেঙে ফেলা।

কিউবার গুয়ান্তানামো বে-তে অবস্থিত একটি নৌঘাঁটিতে সম্ভাব্য ১০ জন অভিবাসীর স্থানান্তর আটকাতে শনিবার একটি মার্কিন নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় আটক অভিবাসীদের কঠোর পরিস্থিতি ও আত্মহত্যার চেষ্টার বিবরণ দেয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল আদালতে মামলা দায়েরকারী মার্কিন সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) বলেছে, বন্দীদের দেশের বাইরে স্থানান্তর করে মার্কিন অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। কোনো বৈধ যুক্তি ছাড়াই ভয় জাগানোর লক্ষ্যে এ কাজ করা হয়েছে।
আটক ১০ জন ভেনেজুয়েলা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের, যাদের চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গুয়ান্তানামোতে স্থানান্তরের হুমকি দেয়া হয়েছে বলে এসিএলইউ জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
এসিএলইউ আরো জানায়, বর্তমানে টেক্সাস, অ্যারিজোনা ও ভার্জিনিয়ায় আটক থাকা এই দশ পুরুষ বন্দীরা গ্যাং সদস্য বা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অপরাধী নন।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন শনিবার এসিএলইউর আইনি চ্যালেঞ্জকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করে বলেন, সংস্থাটি মামলার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিচার বিভাগের সাথে কাজ করবে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নয়েম বলেন, তারা ‘সবচেয়ে খারাপ’ অভিবাসীদের গুয়ান্তানামোতে পাঠাচ্ছেন। তবে বিভাগের মতে, ১৭৭ জন ভেনেজুয়েলার প্রাথমিক দলের প্রায় এক তৃতীয়াংশের কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড ছিল না।
এসিএলইউর মামলায় বলা হয়েছে, গুয়ান্তানামোতে আটক অভিবাসীদের প্রতিদিন কমপক্ষে ২৩ ঘন্টা জানালাবিহীন কক্ষে রাখা হয়। তাদের কিছু বা সম্পূর্ণ পোশাক খুলে তল্লাশি করা হয় এবং পরিবারের সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করতে দেয়া হয় না।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, রক্ষীরা বন্দীদের মৌখিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। এর মধ্যে রয়েছে বন্দীদের চেয়ারে বেঁধে রাখা, পানি না খেতে দেয়া, বন্দীদের গুলি করার হুমকি দেয়া এবং একজনের হাত ভেঙে ফেলা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘এই অবনতিশীল পরিস্থিতি ও চরম বিচ্ছিন্নতার কারণে বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছে।’
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দেন। বহিষ্কার সম্প্রসারণের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রশাসন ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে অভিবাসীদের গুয়ান্তানামো বে-তে অবস্থিত মার্কিন নৌ ঘাঁটির একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো শুরু করে। কেন্দ্রটি বিদেশী সন্ত্রাসবাদের সন্দেহভাজনদের আটক রাখার জন্য সর্বাধিক পরিচিত।