ডোনাল্ড ট্রাম্প
কানাডার স্টিল-অ্যালুমিনিয়ামের ওপর দ্বিগুণ কর নয়
হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো জানান, কানাডার ওপর দ্বিগুণ শুল্কের হুমকি থেকে আপাতত সরে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাত আমদানির ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার হুমকি দেয়ার পর কানাডার অন্টারিও প্রদেশের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বিদ্যুতের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে, তারা অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করছে।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো জানান, কানাডার ওপর দ্বিগুণ শুল্কের হুমকি থেকে আপাতত সরে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে বুধবার থেকেই অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক ধার্য হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আপাতত সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি।
ট্রাম্পের কর দ্বিগুণের ঘোষণা
এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, কানাডা থেকে আনা অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর তিনি দ্বিগুণ শুল্ক ধার্য করবেন। সেক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কর দিতে হবে।
ট্রাম্পের কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার অনেক পরে অটোয়ার প্রধান ডগ ফোর্ড সোমবার প্রস্তাব করেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎ রফতানির ওপর শুল্ক আরোপ করবে। এরপরই ট্রাম্প শুল্ক দ্বিগুণ করার হুমকি দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, বাণিজ্য সচিবকে তিনি জানিয়েছেন যেন কানাডা থেকে আসা অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর আরো ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়। বুধবার থেকেই তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তার এই ঘোষণার পরেই স্টক মার্কেটে ধস নামে।
কানাডা যদি কর না কমায় তাহলে আমদানি করা গাড়ির ওপরেও কর বসানো হবে বলে হুমকি দেন ট্রাম্প।
কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ট্রাম্পের এ ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা কানাডার প্রতিটি শ্রমিক, পরিবার ও ব্যবসার ওপর আঘাত।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে আমাদের প্রতিক্রিয়ায় যেন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সর্বাধিক ও কানাডার ওপর সব থেকে কম প্রভাব পরে।’
তিনি আরো বলেন, তাদের নির্ধারিত কর ততদিন পর্যন্ত বহাল থাকবে যতদিন না পর্যন্ত কানাডার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সম্মান দেখাবে এবং মুক্ত বাণিজ্যের নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে।
শুল্ক টানাপড়েন
ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে কানাডার দ্রব্য সামগ্রীর ওপর ২৫ শতাংশ কর বসানোর কথা ঘোষণা করে হোয়াইট হাউস। তাদের তরফ থেকে বলা হয় মাদক ব্যবসা ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি কানাডা। মার্চ থেকে নতুন শুল্ক চালু হওয়ার কথা থাকলেও কানাডা তাদের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা পাঠাতে সম্মত হয়।
এই শুল্ক পরিস্থিতি আরো জটিল হয় যখন সোমবার অন্টারিওর প্রধান ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের ওপরও তিনি ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর বসাবেন। কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত প্রদেশ অন্টারিও থেকে নিউ ইয়র্ক, মিশিগান ও মিনেসোটায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। তিনি অন্যান্য প্রদেশকেও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক বাড়াতে বলেন।
পরে মঙ্গলবার ট্রাম্প শুল্ক দ্বিগুণ করার কথা ঘোষণা করেন।
একইসাথে তিনি জানান, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম ষ্টেট হতে পারে। এর ফলে শুল্ক নিয়ে কোনো সমস্যাও থাকবে না।
সূত্র : ডয়চে ভেলে