ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির সাথে কমেছে শ্রমের মজুরিও
বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। আগস্টে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০.৪৯ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমেছিল। ওই মাসে ছিল ৯.৯২ শতাংশ। অক্টোবরে ফের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। ওই মাসের শেষে...

দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিতে এসেছে কিছুটা কমেছে। এই হার এখন ৯.৩২ শতাংশ। তবে গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারি মাসের তুলনায় বেড়েছে। এটি গ্রামে বেড়ে ৯.৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে, মানুষের আয় কমেছে। মজুরি হার জানুয়ারি থেকে কমে ফেব্রুয়ারিতে এসে এখন ৮.১২ শতাংশে নেমেছে।
বিদায়ী ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.৬৭ শতাংশে। যা জানুয়ারিতে ছিল ৯.৯৪ শতাংশ। তবে এটি মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। আগস্টে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০.৪৯ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমেছিল। ওই মাসে ছিল ৯.৯২ শতাংশ। অক্টোবরে ফের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। ওই মাসের শেষে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। নভেম্বরে এটি আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১১.৩৮ শতাংশে। ডিসেম্বরে ছিল ১০.৮৯ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরের (মার্চ ২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত) চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতি নিরূপিত হয়েছে শতকরা ১০.৩০ ভাগ। আগের একই সময়ে (মার্চ ২০২৩ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত) চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতি ছিল শতকরা ৯.৬৬ ভাগ। ফলে গড় মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
উল্লেখ্য, সারা দেশের ৬৪টি জেলার ১৫৪টি হাট-বাজার থেকে নির্ধারিত সময়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহপূর্বক প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মাসের সিপিআই প্রস্তুত করা হয়েছে।
সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিতে ৯.৩২ শতাংশ, যা গত জানুয়ারি শেষে ৯.৯৪ শতাংশে ছিল। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.৬৭ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিতে ৯.২৪ শতাংশ। যা জানুয়ারিতে ছিল ১০.৭২ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.৪৪ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে এ হার জানুয়ারির ৯.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯.৩৮ শতাংশে এসেছে ফেব্রুয়ারিতে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.৩৩ শতাংশ।
গ্রামেও খাদ্যবহির্ভূত খাতে পৌনে ১০ শতাংশ
২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছিল ১০.১৮ শতাংশে। ফেব্রুয়ারিতে এসে আরো কমে এখন ৯.৫১ শতাংশ। যা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.৪৮ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার গত জানুয়ারির ১০.৬১ শতাংশ থেকে কমে ফেব্রুয়ারিতে ৯.১৫ শতাংশ হয়েছে। যা আগের বছর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.২৮ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে ৯.৮৫ শতাংশ হয়েছে। জানুয়ারিতে ছিল ৯.৭৭ শতাংশ। যেখানে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.১০ শতাংশ।
শহরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে
ফেব্রুয়ারিতে এসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৩৪ শতাংশ। বিদায়ী ডিসেম্বর শেষে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০.৮৪ শতাংশ ছিল। কিন্তু নতুন বছর ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে যা কমে হয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি ছিল ৯.৮৮ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিতে কমে ৯.৪৭ শতাংশে আসে। যা জানুয়ারিতে ছিল ১০.৯৫ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯.৮৬ শতাংশ। এছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারির ৯.২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে ৯.২৭ শতাংশ। তবে ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে এটি ছিল ৯.৩৫ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির চাপে মজুরি হার কমছে
বিবিএস বলছে, ফেব্রুয়ারি শেষে জাতীয় পর্যায়ে মজুরি হার (সাধারণ) কমে হয়েছে ৮.১২ শতাংশ (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট)। যা জানুয়ারিতে ছিল ৮.১৬ শতাংশ। ফলে কমেছে মজুরি। ফেব্রুয়ারিতে কৃষি, শিল্প, সেবা-তিন খাতে মজুরি হার কমেছে। মজুরি হার পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে কৃষিতে ৮.৩৪ শতাংশ, শিল্পে ৭.৮০ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৩৭ শতাংশ। যা জানুয়ারিতে ছিল কৃষিতে ৮.৪১ শতাংশ, শিল্পে ৭.৮০ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৪৪ শতাংশ।