জামায়াত আমির
আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে
‘এ সময় জাময়াত আমির আছিয়ার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং সবরে জামিল ধারনের তাওফিক কামনা করেন।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দেশে কোরআনের অনুশাসন নেই বলেই আছিয়াদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও জীবন দিতে হচ্ছে। কোরআন দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন, ধর্ষণ অপহরণ কোনো কিছুই থাকবে। এ সময় তিনি ভিকটিম আছিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দানের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবার দোয়া করেন।’
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর মিরপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মিরপুর পূর্ব থানা জামায়াত আয়োজিত বিশিষ্টজনদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় জাময়াত আমির আছিয়ার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং সবরে জামিল ধারনের তাওফিক কামনা করেন।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘কোরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী জনগণের কাছে অঙ্গীকার পালনে আপোষহীন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’
অনুষ্ঠানে থানা আমির শাহ আলম তুহিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ওয়াহিদুল ইসলাম সাদীর পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য শাহাবুদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা: ফখরুদ্দীন মানিক।
এছাড়া মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ও আনোয়ারুল করিম, কাফরুল পশ্চিম থানা আমির আব্দুল মতিন খান, শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান ও মিরপুর পূর্ব থানা নায়েবে আমির আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘রমজান মাস এমন এক মহিমান্বিত মাস, যে মাসের প্রথম দশকে রহমত, মধ্য দশকে মাগফিরাত এবং শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। এ মোবারক মাসেই বদর যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছিল। মক্কা বিজয়ও হয়েছে এ মাসেই। এরপর বড় বড় বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে কোরআনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যাকাতভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে। কোনো যুবক বেকার বা কর্মহীন থাকবে না। থাকবে না মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ বা বৈষম্য। তিনি দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তি কল্যাণরাষ্ট্রের পরিণত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘মানবরচিত মতবাদ দিয়ে দেশ শাসিত হওয়ার কারণে আমাদের সমাজ রাষ্ট্রে এত অশান্তি। ফলে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের রীতিমত অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এমন এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। দেশে কোনো দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ছিনতাই, অপহরণ ও ধর্ষণসহ কোনো অপরাধ থাকবে না। রাষ্ট্রই সকল নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল মৌলিক ও মানবীয় অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে আলোকিত এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে দেশ ও জাতির কাছে প্রতিশ্রতিবদ্ধ।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মাহে রমাজানের নিয়ামত দান করেছেন যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করে নিজেদের পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে পারি। সিয়াম আমাদেরকে সভ্য, সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে। তাই মাহে রমজানের শিক্ষা জীবনের সকল ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে তাক্বওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি করতে হবে।’