আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান
‘‘স্বাধীনতার পর দেশ কখনো জাতীয়তাবাদ, কখনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, আবার কখনো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের মাধ্যমে শাসিত হয়েছে। মূলত, কুরআন দিয়ে দেশ শাসন না হওয়ার কারণে দেশে ঘুষ, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।’’
স্থান
ঢাকা

জামায়াত কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত করার দীর্ঘ পরিসরে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আজ বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টায় মিরপুর ১৩, কাফরুল ৪নং কমিউনিটি সেন্টারে কাফরুল উত্তর জামায়াত আয়োজিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
থানা আমির রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি হাফেজ আশিকুর রহমানের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শহিদুল্লাহ, শূরা সদস্য আব্দুল মতিন খান ও আহসান হাবিব, থানা নায়েবে আমির আলাউদ্দিন প্রমূখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রোজা একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিসে কুদসীতে বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেন, রোজা আমার জন্য, আর নিজ হাতে এর যথাযথ প্রতিদান দেবো। অন্যত্র বলা হয়েছে, আমি নিজেই রোজাদারের হয়ে যাবো। অপর হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে রোজা রাখতে আল্লাহ তার আগের সব গোনাহ মাফ করে দেবেন। রমযান মাসের মর্যাদা সম্পর্কে কালামে হাকিমে বলা হয়েছে, রমযান মাস এমন এক মহিমান্বিত মাস যে মাসে মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে। যা মানবজাতির জন্য হেদায়াত ও সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী। মূলত, ইসলামই মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধান দিয়েছে। অন্য মতবাদে তা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যা এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট। মূলত, আল্লাহ তা’য়ালা দ্বীনকে পূর্ণ করে দিয়েছেন এবং নেয়ামত হিসাবে ইসলামকে আমাদের জন্য জীবন বিধান হিসাবে মনোনীত করেছেন। তাই জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের যথাযথ অনুসরণ করতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে একদফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশ কখনো জাতীয়তাবাদ, কখনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, আবার কখনো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের মাধ্যমে শাসিত হয়েছে। মূলত, কুরআন দিয়ে দেশ শাসন না হওয়ার কারণে দেশে ঘুষ, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বস্তুত দেশকে অপশাসন-দুঃশাসনমুক্ত করতে হলে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায় আমাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। দেশে এমন লোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে হবে যারা আল্লাহকে ভয় পান। সে বৈশিষ্ট্যের লোক তৈরির জন্যই আল্লাহ আমাদেরকে রমযানের মত নিয়ামত দান করেছেন। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সকলকে ইসলামের ছায়াতলেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, রমযান আমাদেরকে পরিশুদ্ধ হওয়ার জন্য দান করা হয়েছে। তাই এ মাসে সিয়াম-কিয়াম সহ বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে নিজেদের নাজাতের পথ তৈরি করতে হবে। তিনি রমযানের শিক্ষা বাস্তবে জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
কাফরুলে ইফতার মাহফিল
রাজধানীর ইব্রাহীমপুরে বুফে প্যালেস রেস্টুরেন্টে কাফরুল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে এক ইফতার মাহফিল থানা আমির উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন সালাউদ্দিন শাহিন, আবুল বাশার, ইকবাল জোসেন, হাসানুর রহমান, জাকির হোসেন প্রমূখ।