ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজন
মাদরাসা শিক্ষকদের জন্য সেইফগার্ডিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় বিষয়টিকে আরো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ মাদরাসাশিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বিএমটিটিআই) যৌথভাবে সেইফগার্ডিং কর্মশালা আয়োজন করে।

ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ মাদরাসাশিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (বিএমটিটিআই) যৌথ উদ্যোগে সেইফগার্ডিং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) গাজীপুরে অবস্থিত বিএমটিটিআই-এ ‘লার্নিং, শেয়ারিং, অ্যান্ড সেইফগার্ডিং’ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
নিজেদের সকল প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনায় সেইফগার্ডিংকে মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় বিষয়টিকে আরো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ মাদরাসাশিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বিএমটিটিআই) যৌথভাবে সেইফগার্ডিং কর্মশালা আয়োজন করে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় কমিউনিটিতে মাদরাসা শিক্ষকদের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন ও তাদের দক্ষ করে তোলা যেন তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখতে পারেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘লার্নিং, শেয়ারিং, অ্যান্ড সেইফগার্ডিং’ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় দেশের সব বিভাগের প্রায় ৮০ জন মাদরাসাশিক্ষক অংশ নেন। এ বছরের শেষের মধ্যে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা নিজেদের ইংরেজি শিক্ষার মাস্টার ট্রেইনার (টিচার এডুকেটর) হিসেবে প্রস্তুত করবেন। ব্রিটিশ কাউন্সিল ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর (ডিএমই)-এর চলমান অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, এ অংশীদারিত্ব মাদরাসা শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, পাঠ্যক্রম উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের সেইফগার্ডিং অনুশীলনী নিশ্চিত করা ও ধারাবাহিকভাবে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি।
দেশজুড়ে বিএমটিটিআই-এর শিক্ষক ও বিভিন্ন মাদরাসার ইংরেজি শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ডিএমই’র মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। ‘লার্নিং, শেয়ারিং, অ্যান্ড সেইফগার্ডিং, কর্মশালায় ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ডিএমই’র অগ্রগতির মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম। তিনি অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল ও বাংলাদেশ সরকার আপনাদের মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে। আপনারা যে অনুশীলনী অনুসরণ করেন এবং ধারাবাহিকভাবে আপনারা যে শিক্ষায় নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা শ্রেণিক্ষক্ষে যা শিখছেন, ভবিষ্যতের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে তা বাস্তবায়ন করুন। দেশজুড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়নে আপনাদের বিশেষ প্রভাব রয়েছে, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে ভেবে দেখুন। ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারে আপনাদের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার মূল্য অনেক বেশি-সুদূরপ্রসারী।’
ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স কর্মশালার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকরা মূল্যবান ভূমিকা পালন করেন। তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও ভূমিকা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মাদরাসাশিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বিএমটিটিআই) ও বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকার এবং তাদের অংশীদারিত্বের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এ কর্মশালার মাধ্যমে আমাদের অগ্রগতি মূল্যায়নের সুযোগ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশের মানোন্নয়নে আমরা ডিএমই-এর সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রত্যাশী।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি সরকার আমাদের প্রয়োজনীয় রির্সোসের মাধ্যমে সহায়তা করে, তাহলে আমরা এ উদ্যোগ আরো বিস্তৃত করতে পারব, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের আরো বেশি শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়ন সহায়তা করা সম্ভব হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমটিটিআই-এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদুল হক। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। অল্প সংখ্যক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা শিক্ষকদের ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে। ব্রিটিশ কাউন্সিল এর মধ্যে অন্যতম। একমাত্র সংস্থা হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিল আমাদের সাথে কাজ করতে এগিয়ে এসেছে।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: আব্দুল মান্নান, ন্যাশনাল সেফগার্ডিং ম্যানেজার আকলিমা আক্তার মিলি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইংরেজি ও স্কুল শিক্ষা টিমের সদস্য শমরেশ সাহা ও সাহেলী নাজ। অনুষ্ঠানে ডিএমই ও বিএমটিটিআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।