ড. মিজানুর রহমান আজহারী
যে এতিমের হক মেরে খায় সে যেন জাহান্নামের আগুন খেল
আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
এতিমদের প্রতি ভালো আচরণ করতে হবে। তাদেরপ্রতি কখনো কঠোর হবেন না। রাসূল (সাঃ) নিজেও এতিম ছিলেন।

যে এতিমের হক ও তাদের সম্পদ মেরে খায় সে যেন জাহান্নামের আগুন খেল বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি স্কলার শায়খ ড. মিজানুর রহমান আজহারী।
রোববার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় পহেলা রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম কমিউনিটি মালয়েশিয়া কর্তৃক আয়োজিত ‘রমাডান এন্ড কোরআনিক রিফ্লেকশন’ ইসলামি কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বয়ানে ড. মিজানুর রহমান আজহারী এ মন্তব্য করেছেন। গতকাল কোরাস হোটেল কুয়ালালামপুরের গ্রান্ড হলরুমে এ ইসলামি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ মুসলিম কমিউনিটি মালয়েশিয়ার প্রধান স্বমন্বয়ক মো: মোরাদ হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সঞ্চালনা করেন যুবায়ের রহমান।
ড. আজহারী বিস্তারিত আলোচনায় আল্লাহু আকবর ধ্বনির প্রশংসা করে বলেন, আপনারা দেখেছেন ভারতে কিছু সন্ত্রাসী জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছিল মুসলিম নারী মুসকানকে লক্ষ্য করে। তখন মুসকানের আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে সারা বিশ্ব প্রকম্পিত হয়েছিল। রাসূল (সাঃ) যখন গুহায় আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন ছিলেন তখন তিনি ইয়া ওম্মাতি ইয়া ওম্মাতি, আমার ওম্মতকে বাঁচাও জিকির করছিলেন তখন জিবরাইল (আঃ) আল্লাহর বানী রাসূলকে (সাঃ) শুনিয়ে দিলেন, হে রাসূল মহান আল্লাহ আপনাকে শ্রীঘ্রই এত পরিমাণ নিয়ামত দান করবেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন। প্রিয় রাসূল (সাঃ) মায়ের পেটে ৬ মাস বয়সের সময় তিনি পিতা আবদুল্লাহ কে হারান। তারপর ভুমিষ্ট হবার পর মাতা আমিনাও চলে গেলেন। বিশ্বনবী এতিম হয়ে হালিমা, দাদা ও সর্বশেষ চাচার কাছে বড় হতে লাগলেন।
ড. আজহারী আরো বলেন, এতিমদের প্রতি ভালো আচরণ করতে হবে। তাদেরপ্রতি কখনো কঠোর হবেন না। রাসূল (সাঃ) নিজেও এতিম ছিলেন। রাসূল (সাঃ) বলেন এতিমদের আদর স্নেহ করা মানেই আমাকে সম্মান কর। হাতের ২ আঙুলের মধ্যে যে পার্থক্য আছে জান্নাতে আমার বাড়ির সাথে তাদের বাড়ির দূরত্ব হবে সেই ২ আঙুলের মতই পার্থক্য। রাসুল(সাঃ) এর প্রতি আল্লাহ পাক কিছু কর্মসূচি দিয়েছিলেন এর প্রথমটি হচ্ছে, এতিমের প্রতি কঠোর হবেন না, যে সাহায্য চাইতে আসে ঐ ফরিয়াদী কে কখনোই ধমক দিবেন না, আল্লাহ পাক আপনাকে যে অসীম নেয়ামত দিয়েছেন তার বর্ননা করুন।
আলোচনা শেষে প্রবাসী ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যানে বিশেষ মোনাজাত করে বুফের খাবার খেয়ে সকল প্রবাসীর সাথে ইফতার করেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটি মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মোরাদ হোসেন বিগত কিছু উল্লেখযোগ্য সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি জানান, সংগঠনটি মালয়েশিয়ায় স্থানীয় কমিউনিটির বিশেষত বন্যার সময় দুর্গতদের সহায়তা, প্রবাসে মৃত্যুবরণ করা বাংলাদেশীদের লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা, ফিলিস্তিনের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং মালয়েশিয়ায় অসুস্থ ও অসহায় বাংলাদেশীদের জন্য সহায়তা প্রদানসহ নানা মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকার চেষ্টা করি, আল্লাহ আমাদের এই কাজগুলো কবুল করুন। সকলের নিকট দোয়ার দরখাস্ত রইল, যেন বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটি মালয়েশিয়ায় আরো বড় পরিসরে মানবতার খেদমত করতে পারে।