ধর্ষণের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে, ঢাবিতে আল্টিমেটাম

শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১২টার পর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষক নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় তাদের বক্তব্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ও অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবির জানান। পরে রাত প্রায় ২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তা না হলে...

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ধর্ষণের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
ধর্ষণের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ | ছবি : সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঢাকাসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা, যাদের বেশিভাগই ছিলেন নারী শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ ও অবস্থান থেকে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেটি না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একজন কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতারের পর ‘তৌহিদী জনতা’ নাম দিয়ে একদল ব্যক্তি থানার সামনে অবস্থান নিয়ে হট্টগোল করে। পরে বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তি আদালতে জামিন পান।

এ ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। এর মধ্যেই মাগুরায় একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। ওই শিশুর অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এমন প্রেক্ষাপটে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে হল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রীরা। পরে তাদের সাথে কয়েকটি হলের ছাত্ররাও যোগ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও একই দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও।

এসব বিক্ষোভ, অবস্থান, সমাবেশ ও মিছিলের সময় ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন- ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই - ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত- ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’- স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসগুলো।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শুরুতে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ধর্ষক ও নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার প্ল্যাকার্ড বহন করেছেন।

মিছিলটি রোকেয়া হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে।

পরে রাত ১২টার কিছুক্ষণ আগে সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করলে অন্য হলের শিক্ষার্থীরাও তাতে যোগ দেন।

শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১২টার পর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষক নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় তাদের বক্তব্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ও অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবির জানান।

পরে রাত প্রায় ২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তা না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার দিকে শামসুজ্জোহা চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা সরকারের উদ্দেশে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

সূত্র : বিবিসি