সাবেক স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে দুই সন্তান নিয়ে দিশেহারা এক স্কুলশিক্ষিকা

‘বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন মোস্তাক নিয়মিত মাদকসেবন করেন এবং একাধিক নারীতে আসক্ত। তিনি প্রায় প্রতিদিনই নেশাগ্রস্ত হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। ’

সংবাদ-সম্মেলন
নয়া দিগন্ত

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আঁখি আক্তারকে অব্যাহত নির্যাতন, হত্যা ও চাকরিচ্যুতির হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন সাবেক স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান। তার এই নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (২ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান স্কুলশিক্ষিকা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার বাবা মো: আব্দুল হাই হাওলাদার, তার সন্তান ও স্বজনরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত বক্তব্যে শিক্ষিকা আঁখি আক্তার অভিযোগ করে জানান, ২০১৪ সালে পটুয়াখালী সদর থানার টেংরাখালী গ্রামের মো: আব্দুল লতিফ হাওলাদারের ছেলে মোস্তফিজুর রহমানের (মোস্তাক) সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন মোস্তাক নিয়মিত মাদকসেবন করেন এবং একাধিক নারীতে আসক্ত। তিনি প্রায় প্রতিদিনই নেশাগ্রস্ত হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এরই মধ্যে তাদের দুই সন্তান জন্ম নেয়। নির্যাতনের কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০১৮ সালে তারা যৌথভাবে তালাকের মাধ্যমে আলাদা হন। পরে শিক্ষিকার মা ও তার ভাইয়ের প্ররোচনায় তালাকের এক মাসের মাথায় ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তাকে দ্বিতীয়বার মোস্তাকের সাথে বিয়ে দেন। তিনি তাদের সন্তানের কথা ভেবে দ্বিতীয় বিয়েতে সম্মতি দেন। প্রতিরাতে নেশাগ্রস্থ হয়ে স্ত্রী-সন্তানের সামনেই একেক সময় একেকজন নারীর সাথে বাসায় রাত্রীযাপন করতেন।

আঁখি আক্তার আরো জানান, কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে গত ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে চরমভাবে নির্যাতিত হয়ে ভাড়া বাসায় চলে আসেন। বাধ্য হয়ে তিনি মোস্তাকের বিরুদ্ধে দুমকি থানায় জিডি করি। একপর্যায় ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মোস্তাককে তালাক দিতে বাধ্য হন। এতে মোস্তাক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তার মা ও ভাইয়ের সাথে হাত মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় স্কুল শিক্ষিকাসহ তার সৎ বোন ও বোন জামাইকে আসামি করায় তাদের সংসারেও চরম অশান্তি দেখা দেয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর মোস্তাক সাংবাকিতার প্রভাব খাটিয়ে তাকে হেনস্তা করছেন ও তাকে চাকুরিচ্যুত করা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো এবং নানাভাবে ক্ষতি সাধনের হুমকি দিয়ে আসছেন।

মোস্তাক এসএসসি পাস হলেও জাল সনদ তৈরি করে নিজেকে এইচএসসি ও বিএ পাস হিসেবে পরিচয় দিয়ে ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে দাখিল করে সুবিধা ভোগ করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।