৫ হত্যা মামলার আসামি

‘মব সৃষ্টি’ করে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল আওয়ামী লীগের লোকজন

‎পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া আসামির নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী।

নিজস্ব প্রতিবেদক
Untitled-1
পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল আওয়ামী লীগের লোকজন | সংগৃহীত

‎রজধানীর মোহাম্মদপুরে সাবেক এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পাঁচ মামলার আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ‘মব সৃষ্টি’ করে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১২ মার্চ) মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।

‎পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া আসামির নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে জাহাঙ্গীর কবির নানককে ২৫ লাখ টাকা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঢাকার কয়েকটি থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো- মোহাম্মদপুর থানায় মামলা নম্বর-৬৯, রামপুরা থানায় মামলা নম্বর-১৮, বাড্ডা থানায় মামলা নম্বর-১৬, ক্যান্টমেন্ট থানায় মামলা নম্বর-১৬ ও চকবাজার থানায় মামলা নম্বর-৫৬।

‎স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি টিম আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করতে যায়। তাকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরানোর সময় আশপাশে থাকা ৮ থেকে ১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়।

‎পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেয়া একজন সিকিউরিটি গার্ড জানান, এভোরোজ স্কুলের মালিক আমাদের স্যার গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিল। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল। ওই সময় তার এক হাতে হাতকড়াও লাগায়। সাথে সাথে আমরা যারা ছিলাম সবাই পুলিশকে ঘেরাও করে ধরে তাকে ভেতরে নিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশের সাথে আমাদের লোকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়।

এ সময় আরো দুই সিকিউরিটি গার্ড সাথে ছিলেন। তারা জানান, আমাদের সামনে থেকে আমাদের স্যারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে এটা কিভাবে সম্ভব। গ্রেফতার করতে আসছে দেখে আমরা সবাই পুলিশকে বাধা দিয়েছি। তাদের ওই সময় ওয়ারেন্ট দেখাতে বলেছি। তারা মোবাইলে কাগজ দেখায়। কোনো কাগজপত্র পুলিশ সাথে আনেনি।

আসামি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, মব সৃষ্টি করে পুলিশকে বাধা দিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেয় স্থানীয় কিছু লোকজন।

‎এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা জানান, আজ মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসর তার দলবল সাথে নিয়ে ছিলেন। আসামি গ্রেফতারের সময় ওই আসামির লোকজন মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর বাধা সৃষ্টি করে। গ্রেফতার করতেই দেয়নি পুলিশকে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। খুব শিগগিরই আসামিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।