বাউফলে একটি পরিচয়পত্রের মূল্য ৩০০ টাকা!
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক আমিনুল ইসলাম পরিচয়পত্র প্রদানে টাকা নেয়ার বিষয়টি শিকার করে বলেন, ‘পৌরসভার আয় বাড়াতে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধের জন্যই রেজুলেশন করে টাকা নেয়া সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

আসাদুজ্জামান সোহাগ, বাউফল (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভা থেকে পরিচয়পত্র নিতে হলে ৩০০ টাকা করে দিতে হয়। পাঁচ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশের মতো বাউফল পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলরদের অপসরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রশাসক ও বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মকর্তাদের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে পৌর নাগরিকরা তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাদেরকে পরিচয়পত্র নিতে টাকা গুনতে হচ্ছে। একটি পরিচয়পত্র নিতে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা। অথচ তারা আগে বিনামূল্যে এ সেবাটি পেত। বর্তমানে তা কিনে নিতে হচ্ছে।
এরপর থেকে পৌরবাসীকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বিশেষ করে পৌর এলাকায় গরীব মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বেশি। বাউফল পৌরসভায় মোট ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। মোট জনসংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। তাদের প্রয়োজনে পৌরসভা থেকে পরিচয়পত্র নিতে হয়।
আগে পৌর নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে গেলেই পরিচয়পত্র মিলত। কিন্তু এখন সেই পরিচয়পত্র প্রয়োজন হলে নাগরিকরা পাচ্ছেন না। পরিচয়পত্রের জন্য তাদের দিনের পর দিন পৌরসভা কার্যালয়ে ঘুরতে হচ্ছে।
পরিচয়পত্রে প্রশাসকের (ইউএনওর) স্বাক্ষর ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর লাগে। আর এই স্বাক্ষরের জন্য কয়েক দফায় তাদের পৌরসভায় যেতে হয়। তারপর ৩০০ টাকা নগদ প্রদান করে পরিচয়পত্র নিতে হয়।
অভিযোগ রয়েছে, টাকা দিয়ে পরিচয়পত্র নিলেও নামের বানানে অনেক ভুল থেকে যায়। সেই ভুল সংশোধন করতে গিয়ে আবার টাকা গুনতে হচ্ছে। এরকম একটা ভুলে ভরা পরিচয়পত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক সংবাদকর্মী পোস্ট করে লিখেন, ‘৩০০ টাকা নেন, ভালো কথা, অন্তত বানানটা ঠিক করে দেন।’
একই জটিলতা জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রেও। মাসের পর মাস ঘুরে জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে না। আবার জন্মনিবন্ধনে ভুল হলে সংশোধনের জন্য ডিডি এল জির অনুমোদন লাগে। এসব মিলিয়ে পৌর নাগরিকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাকা দিয়ে পরিচয়পত্র নেয়ার বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক আমিনুল ইসলাম পরিচয়পত্র প্রদানে টাকা নেয়ার বিষয়টি শিকার করে বলেন, ‘পৌরসভার আয় বাড়াতে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধের জন্যই রেজুলেশন করে টাকা নেয়া সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’