শিবিরের সংশ্লিষ্টতা পায়নি তদন্ত কমিটি

সিলেট এমসি ছাত্রাবাসে মারামারি ‘ব্যক্তিগত আক্রোশে’

mc collage
সিলেট এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো: রিয়াজ জানান, ‘গত রোববার কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে কাউন্সিল মিটিংয়ে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন পেশ করেন।’

সিলেট ব্যুরো

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দু’শিক্ষার্থীর মারামারিকে কেন্দ্র করে তালামীযকর্মী আহতের ঘটনা ব্যক্তি আক্রোশে ঘটেছে। এ ঘটনায় ছাত্রশিবির কিংবা কোনো ছাত্র সংগঠনের সম্পৃক্ততা পায়নি তদন্ত কমিটি।

এই ঘটনার সাথে অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থীর ছাত্রাবাসের সিট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিতদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। ছাত্রাবাসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিলেট এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো: রিয়াজ জানান, ‘গত রোববার কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে কাউন্সিল মিটিংয়ে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন পেশ করেন।’

প্রতিবেদনে জানা গেছে, ‘ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী রিয়াদ ও হৃদয়ের আগে থেকেই ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা চলছিল। পরে ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে হৃদয় আর রিয়াদের মধ্যে ওই রাতে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে দু’জনই আহত হন।’

তিনি আরো জানান, ‘তদন্ত কমিটি এই ঘটনার সাথে কোনো দল বা গোষ্ঠীর জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি। এটি মূলত রিয়াদ ও হৃদয়ের মধ্যে হয়েছে। আহত রিয়াদ তার সংগঠন তালামীযকে সাংস্কৃতিক সংগঠন বলে জানিয়েছে। বাস্তবে তারা একটি ছাত্র সংগঠন। এ ঘটনার সাথে শিবিরেরও কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। আহত তালামীযকর্মী রিয়াদ প্রথমে ছাত্রশিবির জড়িত থাকার অভিযোগ করলেও পরে তদন্ত কমিটির কাছে এরকম কিছু বলেনি। তার কথার মধ্যেও বেশকিছু গরমিল পাওয়া গেছে। এছাড়া হৃদয় এই সমস্যার কথা আমাদের জানাতে পারতো। এভাবে মধ্যরাতে তার সিনিয়রের রুমে গিয়ে এই হাতাহাতির ঘটনা না ঘটালে এমন ঘটতো না। আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। আর হৃদয় যেহেতু এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে, সেহেতু তার ছাত্রাবাসের সিট বাতিল করা হয়েছে।’

জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের প্রথম ব্লকে দু’শিক্ষার্থীর মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে হৃদয় ও রিয়াদ নামে দু’শিক্ষার্থী আহত হন। এই ঘটনায় আহত রিয়াদ তার ওপর ছাত্র শিবির হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া তার পায়ের রগ কাটার চেষ্টা হয়েছে বলেও অপপ্রচার চালান। বাস্তবে এমন কিছুই হয়নি। দু’জনের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রিয়াদ ঘরের দরজার সিটকিনির উপর পড়ে গিয়ে তার পা সামান্য ছিলে যায়। এতে একটি সেলাই দেয়া হয়। এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই দিনই কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হুমায়ুন কবীর চৌধুরীকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো: রিয়াজ।

এ ঘটনায় আহত মিজানুর রহমান রিয়াদ ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কলেজ শাখার তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক। তিনি তখন দাবি করেন, তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। অপর আহতের নাম জাকিরুল ইসলাম হৃদয়। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য।

এ ঘটনাকে ‘ছাত্র শিবিরের ঘৃণ্য হামলা’ আখ্যা দিয়ে নগরে বিক্ষোভ মিছিল করে আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সিলেট মহানগর শাখা। তবে তখনই এ ঘটনায় শিবির জড়িত নয় দাবি করে বিবৃতি দেয় শিবিরের কেন্দ্রীয় শাখা। প্রতিবাদে নগরে ছাত্র শিবির পাল্টা মিছিল করেছিল।