বকেয়া মজুরির দাবিতে রাজনগরে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি
মৌলভীবাজারের রাজনগরে মাথিউড়া চা বাগানের বকেয়া মজুরির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে শ্রমিকরা।

রাজনগর (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা
মৌলভীবাজারের রাজনগরে মাথিউড়া চা বাগানের শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি ও বোনাসের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) বাগানের শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করে।
এছাড়াও লাল পূজার আগে ৪০ শতাংশ বোনাস দেয়ার কথা থাকলেও শ্রমিকরা তা পায়নি। এতে তাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে মালিক পক্ষ ২০ শতাংশ বোনাস দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা মানতে নারাজ শ্রমিকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের মাথিউড়া চা বাগানে ৬৩৫জন চা শ্রমিক রয়েছে। এসব শ্রমিকরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের সাপ্তহিক মজুরি পাচ্ছে না। এদিকে চা শ্রমিকদের ‘লালপূজা (পাগুয়া)’ উপলক্ষে ৪০ শতাংশ বোনাস দেয়ার কথা থাকলেও তাও পাচ্ছে না। পূজা শুরুর একদিন বাকি থাকলেও বোনাসের টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে।
আজ বুধবার সকাল থেকে শ্রমিকরা ম্যানেজারের বাংলোর সামনের খেলার মাঠে জড়ো হয়ে এ কর্মবিরতি পালন করে।
এ বিষয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকরা জেলা প্রশাসনসহ বাগান কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। এতে তারা বকেয়া ও বোনাস না পেলে বাগানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণ হবে বলে জানিয়েছিল।
তবে বাগান কর্তপক্ষ বলছে, লোন ছাড় না হওয়ায় তারা শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা ও বোনাস পরিশোধ করতে পারছে না।
মাথিউড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি সুগ্রিম গৌড় জানান, গত ৭ সপ্তাহের বকেয়া পাওনা রয়েছে। বারবার জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। পূজার শুরু আগে তাদের ৪০ শতাংশ বোনাস দেয়ার কথা। তাও তারা পায়নি।
তিনি বলেন, দাবি জানিয়েছি- হয় তাদের বকেয়া পরিশোধ, না হয় বোনাসের পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু কোম্পানি শুধু লোনের কথাই বলছে। লোন পেলে তারা টাকা দেবে। এভাবে চলতে থাকলে শ্রমিকরা না খেয়ে মারা যাবে।
মাথিউড়া চা বাগানের ম্যানেজার ওমর ফারুক এ ব্যাপারে বলেন, ‘শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পাওনা রয়েছে। প্রতি বছর লালপূজার আগে ৪০ শতাংশ বোনাসও দেয়া হয়। কিন্তু অর্থ স্বল্পতার কারণে কোম্পানি তাদের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা লোন স্যাংশনের জন্য অপেক্ষা করছি। লোনের টাকা পেয়ে গেলে তাদের সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে। এছাড়াও বর্তমানে বোনাস ২০ শতাংশ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু তারা মানছে না।
এ ব্যাপারে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে কেউ এ ব্যাপারে জানায়নি।’