সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকী

কবি আল মাহমুদের বাড়ি সংরক্ষণ ও জাদুঘর করা হবে

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেছেন, পরিবারের সম্মতি পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের বাড়িতে স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার রচনা ও বাড়ির স্মৃতি আগামী প্রজন্মের জন্য ধরে রাখা ও ছড়িয়ে দেয়া জরুরি। এই বিষয়ে আমাদের আগ্রহ আছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকার এই কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করবে।

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
n-17
ছবি : নয়া দিগন্ত

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেছেন, পরিবারের সম্মতি পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের বাড়িতে স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার রচনা ও বাড়ির স্মৃতি আগামী প্রজন্মের জন্য ধরে রাখা ও ছড়িয়ে দেয়া জরুরি। এই বিষয়ে আমাদের আগ্রহ আছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকার এই কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবি আল মাহমুদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কালের কলসের আয়োজনে ‘বিপ্লব বসন্তে আল মাহমুদ’ নামে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেন, ‘কলকাতার হেজিমনির মধ্যে লেখালেখি শুরু করেছিলেন আল মাহমুদ। চার দশক ধরে আল মাহমুদকে নিয়ে সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদিদের কথিত মেইন স্ট্রিম সাহিত্যে উঠতে না দেয়ার পেছনে ছিল রাজনীতি।’

তিনি বলেন, ‘আল মাহমুদ কোনো রাজনৈতিক দলের নন তিনি পুরো বাংলা ভাষার।’

কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আল মাহমুদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্তমূলকভাবে হাজির হয়েছে। তার চিন্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। জুলাই আন্দোলনে প্রমাণ হয়েছে আমরা ঘুমিয়ে নেই। জেগে আছি দেশের যেকোনো সঙ্কট মোকাবেলা করব সম্মেলিতভাবে এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালী করলে আমাদের এমন কাজগুলো সহজ হবে।’

তিনি বলেন, ‘২৪-এর বিপ্লব যেন বেহাত না হয় এজন্য সাংস্কৃতিক লড়াই অবধারিত, এই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে শিল্পী, কবি, সংস্কৃতিকরমীদের।’

সভাপতির বক্তব্যে কবি আব্দুল হাই শিকদার অবিলম্বে কবি আল মাহমুদের কবর রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কারের দাবি জানান। কবির মৃত্যুর পর তাকে শহীদ মিনারে আনতে না দেয়া এবং গণকবরে দাফন করা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান না জানানোর কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কালের কলস সম্পাদক, লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকজয়ী আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কবি শাহীন রেজা, কবি জাকির আবু জাফর, ড. কুদরত ই হুদা, ড. কাজল রশীদ শাহীন, কবি ইমরান মাহফুজসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে আল মাহমুদের গান পরিবেশন করেন শিল্পী আমিরুল মোমেনিন মানিক ও জান্নাতুন নাঈম পিংকী।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল পারভীন, কামরুল হাসান জুয়েল, মুক্তা বরমন, ফারাহ দোলন, কঠোর হাসান, মুসা আখন্দ, এম তারেক হাসিব, মনিরুজ্জামান পলাশসহ আরো অনেকে।

এর আগে, কবি ও আবৃত্তিশিল্পী শাকিল মাহমুদ ও মুশফিকা নিপার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পরে কালের কলস সম্পাদক কবি আবিদ আজম রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির প্রয়াণ দিবস পালন না করায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচারী সময়ে আল মাহমুদকে তুমুল অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়েছে। অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকে আল মাহমুদের কবিতা পুনর্বহালের দাবি জানান তিনি। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অমরতার পথে হারিয়ে যান কবি আল মাহমুদ।